নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার কর্ণগোপ এলাকার সজিব গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ এর সেজান জুস কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের মধ্যে ৪৫ জনের লাশ বুধবার থেকে পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হবে। স্বজনদের সঙ্গে ডিএনএ পরীক্ষার পর লাশগুলোর পরিচয় শনাক্ত করা হয়।
আগুনে পোড়া লাশগুলো ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে রাখা হয়েছে। তবে সবগুলো লাশ প্রায় আগুনে পুড়ে অঙ্গার ও কয়লার মতো হয়ে যাওয়ায় কারো চেহারা বোঝা যায়নি। পরে পরিচয় শনাক্তে নিহতদের পরিবারের লোকজনদের কাছ থেকে ডিএনএর নমুনা সংগ্রহ করা হয়।
নারায়ণগঞ্জ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) বিশেষ পুলিশ সুপার মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, ডিএনএ পরীক্ষা করে ৪৫ জনের পরিচয় শনাক্ত করা গেছে। পরিচয় শনাক্ত হওয়ায় এসব লাশ বুধবার দুপুর ২টা থেকে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
তিনি বলেন, প্রথম দিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গের ২৪ জনের লাশ হস্তান্তর করা হবে। পরের দুই দিনে ধারাবাহিকভাবে সোহরাওয়াদী হাসপাতালের মর্গে থাকা লাশ হস্তান্তর করা হবে। এখনো তিনজনের পরিচয় শনাক্ত হয়নি বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোস্তাইন বিল্লাহ জানান, লাশ দাফন ও সৎকারের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রত্যেক পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা নগদ দেয়া হবে।
৮ জুলাই বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে রূপগঞ্জ উপজেলার কর্ণগোপ এলাকায় অবস্থিত ওই কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৫২ জনের মৃত্যু ঘটেছে। যাদের ৪৯ জনের লাশ পুড়ে যায়। এ ঘটনায় রূপগঞ্জ থানায় ১০ জুলাই একটি হত্যা মামলা করেন ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক নাজিম উদ্দিন। পরে তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডি।
ওই মামলায় পুলিশ সজিব গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল হাসেম (৭০), হাসীব বিন হাসেম (৩৯), তারেক ইব্রাহীম (৩৫), তাওসীব ইব্রাহীম (৩৩), তানজীম ইব্রাহীম (২১), সিইও শাহেন শান আজাদ (৪৩), উপ মহাব্যবস্থাপক মামুনুর রশিদ (৫৩), সিভিল ইঞ্জনিয়ার ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সালাউদ্দিনকে (৩০) গ্রেফতার করে। তাদের চার দিন করে রিমান্ডে নেয়া হয়।
এরইমধ্যে ১৪ জুলাই চেয়ারম্যান হাসেমের দুই চেলে তাওসীব ইব্রাহীম (৩৩) ও তানজীম ইব্রাহীম (২১) আদালত থেকে জামিন পান। আর বাকি ছয়জনকে কারাগারে পাঠানো হয়।
Array