অনলাইন ডেস্ক: শারীরিকভাবে অক্ষম কিংবা অসুস্থ ব্যক্তিকে হজ পালনের জন্য সৌদি আরবে পাঠানো যাবে না—এ বিষয়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ‘হজ ও উমরাহ ফেয়ার ২০২৫’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন এই সতর্কবার্তা দেন।
তিনি জানান, গত হজ মৌসুমে শারীরিকভাবে অক্ষম এমন অনেক হাজিকে পাঠানো হয়েছিল, যা হজ পালনের ক্ষেত্রে চরম বিড়ম্বনার সৃষ্টি করে। উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, “একজন হাজির পা নেই, তার জামাই ও স্ত্রীও শারীরিকভাবে অক্ষম। আবার আরেকজনের পায়ের নিচে সিরোসিসসহ মারাত্মক চর্মরোগ ছিল, উঠতে পারছিলেন না—তাকে এজেন্সির লোকজন ফেলে চলে যায়। এমনকি ৮২ বছরের এক মানসিক রোগী হজ শুরুর আগেই হারিয়ে যান, যাকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।”
ধর্ম উপদেষ্টা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “পয়সার জন্য এমন কাউকে পাঠানো যাবে না, যে হজ করতে সক্ষম নয়। এ বছর থেকে সিভিল সার্জনের সনদ এবং হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)-এর পরামর্শ ছাড়া কাউকে পাঠানো হবে না।”
হজ ব্যবস্থাপনার অন্যান্য সমস্যার কথাও অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন তিনি। সৌদি আরবের হজ ও উমরাহ মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে তিনি জানান, বাংলাদেশি হাজিদের জন্য ক্যাটারিং সার্ভিস বাতিলের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, কারণ অধিকাংশ হাজি সৌদি খাবারে অভ্যস্ত নন। মিনা, মুজদালিফা ও আরাফাতে টয়লেটের সংখ্যা বাড়ানো এবং আবাসন ব্যবস্থা উন্নত করার জন্যও দাবি জানানো হয়েছে।
তিনি অভিযোগ করেন, অনেক স্থানে এমন সংকীর্ণ আবাসন দেওয়া হয় যেখানে চিৎ হয়ে ঘুমানো সম্ভব হয় না। এছাড়া মুজদালিফাতে শেষ রাতে পানি না থাকার বিষয়েও সৌদি কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
এজেন্সি মালিকদের উদ্দেশে উপদেষ্টা বলেন, “আমাদের কোনো বিরোধ নেই, বরং আমরা এক পরিবারের মতো টিম স্পিরিট নিয়ে কাজ করব। হজের বিমানভাড়া নির্ধারণে হাবের প্রতিনিধিকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে এবং সব আলোচনা হবে স্বচ্ছভাবে। আমার মন্ত্রণালয়ে হজ নিয়ে কেউ ঘুষ নিলে কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে।”
হজযাত্রীদের উদ্দেশে তিনি সৌদি আরবে জর্দা, তামাক ও সিগারেট না নেওয়ার আহ্বান জানান। তার ভাষায়, “এসব আমাদের দেশে মাদক হিসেবে ধরা না হলেও সৌদিতে মাদক হিসেবে বিবেচিত হয়, যা দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করে।”
তিনি আরও বলেন, হজ ব্যবস্থাপনাকে মধ্যসত্ত্বভোগীদের প্রভাবমুক্ত রাখতে হাবের সহযোগিতা প্রয়োজন, যাতে সুষ্ঠু ও সম্মানজনকভাবে হজ আয়োজন করা সম্ভব হয়।