মাসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা উন্নয়নে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ের সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা।
বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) ‘ঋতু কর্মসূচির স্থায়ীত্বশীলতা সমীক্ষা থেকে প্রাপ্ত শিখন বিনিময় সভা’য় তারা বলেছেন, অনেক চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সাফল্যের সাথে সামনে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব।
আন্তর্জাতিক সংস্থা সিমাভি ও বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস) আয়োজিত ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপিএস’র নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবীর। বিএনপিএস’র উপ-পরিচালক শাহনাজ সুমীর সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ নেন এলজিইডির ন্যাশনাল কন্সালটেন্ট মো. মনিরুজ্জামান, জাতীয় পাঠ্যক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) সিনিয়র স্পেশালিস্ট সৈয়দ মাহফুজ আলী, ইউনিসেফের এডুকেশন স্পেশালিস্ট ইকবাল হোসেন, সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল ড. মমতাজ সাহানারা, ডরপ-এর পরিচালক মো. জোরায়ের হাসান, ওয়াটার এইডের মাহফুজ-উর-রহমান, সিমাভি-ডব্লিউএআইর কান্ট্রি কো-অর্ডিনেটর অলোক কুমার মজুমদার, নেদারল্যান্ড দূতাবাসের সিনিয়র পলিসি অ্যাডভাইজার মাশাফিকা জামান সাটিয়ার, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের বনশ্রী মিত্র নিয়োগী, অক্সফামের গীতা অধিকারী প্রমুখ। সূচনা বক্তব্য উত্থাপন করেন সিমাভির প্রোগ্রাম ম্যানেজার মাহবুবা হক কুমকুম।
সভায় বীর মুক্তিযোদ্ধা রোকেয়া কবীর বলেন, করোনা পরিস্থিতি স্বাস্থ্যখাতকে অনেক পিছিয়ে দিয়েছে। এই সময়ে ঋতু কর্মসূচি থেকে অর্জনের অনেকটা মুছে গেছে। যেটুকু আছে সেটুকু ধরে রাখতে হবে। এ জন্য পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ প্রয়োজন। তিনি বলেন, ধর্মীয় বক্তাদের হেলিকপ্টারে চড়ার জন্য জনগণই টাকা দেয়, অথচ স্কুলে মাসিকবান্ধব টয়লেট স্থাপনের জন্য বিদেশ থেকে টাকা আনতে হয়। সমতাপূর্ণ সমাজ চাইলে এসব বিষয় নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করতে হবে। সমাজে একটা অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে হবে। মাসিককে ঘিরে সমাজে যে ট্যাবু আছে তা দূর করতে হবে।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় কর্তৃক মাসিক বিষয়ে বিশেষ উদ্যোগের কথা তুলে ধরে মনিরুজ্জামান বলেন, বিভিন্ন অংশীদারদের যুক্ত ও মাসিক সংক্রান্ত আলোচ্য বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করে একটি কৌশলপত্র তৈরি করা হয়েছে। যা ইতোমধ্যে সরকার অনুমোদন দিয়েছে। এই কৌশলপত্রের বাস্তবায়ন নির্দেশিকা তৈরির জন্য একটি জাতীয় সমন্বয় কমিটি করা হবে। সবার মতামতের জন্য সেটি উন্মুক্ত করা হবে।
সৈয়দ মাহফুজ আলী বলেন, এনসিটিবির কারিকুলামে মাসিকের বিষয়গুলো আছে। শিক্ষকদের এ ব্যাপারে ওরিয়েন্টেশনও দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে দুর্বলতাগুলো দূর করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। নতুন কারিকুলামে মাসিক সংক্রান্ত বিষয়গুলো গুরুত্বের সাথে রাখা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, স্বাস্থ্য সুরক্ষার সকল বিষয়ে স্কুলে শিক্ষাদানের জন্য বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। এখন বিদ্যমান কারিকুলাম রিভাইজের কাজ করছি, যা ২০২১ সালে চূড়ান্ত হওয়ার কথা ছিল। কোভিডের কারণে একটু পিছিয়ে গেলেও ২০২২ সালে চূড়ান্ত করা যাবে।
ইউনিসেফের ইকবাল হোসেন বলেন, ঋতু কর্মসূচিটা ব্যাপক বিস্তৃত ছিল। সংশ্লিষ্ট অংশীদারদের অংশগ্রহণ, প্রয়োজনীয় সুবিধা নিশ্চিত এবং কর্মসূচির শিখন চর্চার জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির ফলে কর্মসূচির সুফল পাওয়া গেছে। এই কর্মসূচির আওতায় তৈরি হওয়া সবগুলো উপকরণে সবার অ্যাকসেস তৈরির অনুরোধ জানান তিনি।
Array