আন্তর্জাতিক ডেস্ক :মাহসা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে ইরানে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আবারও নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় জাহেদান শহরে পুলিশের গুলিতে আরও দুজনের মৃত্যু হয়। চলমান বিক্ষোভে একের পর এক আন্দোলনকারী নিহতের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘও।
মুহুর্মুহু গুলির শব্দে শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) কেঁপে ওঠে ইরানের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় জাহেদান শহর। হিজাব ইস্যুতে কুর্দি তরুণী মাহসা আমিনির মৃত্যুর জেরে চলমান বিক্ষোভে এদিন কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী রাস্তায় নামেন। বিক্ষোভ দমাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী টিয়ারগ্যাস ও গুলি ছুড়লে আন্দোলনকারীরাও পাল্টা ইটপাটকেল ছোড়েন। রণক্ষেত্রে পরিণত হয় গোটা শহর। সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন হতাহত হন বলে জানিয়েছে গণমাধ্যম। এর আগে, গেল দুই দিনে রাজধানী তেহরানসহ চার প্রদেশে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে অন্তত আট বিক্ষোভকারী নিহতের ঘটনা ঘটে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশও মাহসা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভে উত্তাল। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে টাইমস স্কয়ারের সামনে জড়ো হন শত শত আন্দোলনকারী। এ সময় নির্বিচারে গুলিবর্ষণ বন্ধের আহ্বান জানান তারা। বিক্ষোভ হয়েছে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভেও। এ সময় ইরানের প্রশাসনের নিন্দা জানান অংশগ্রহণকারীরা।
এদিকে, ইরানে বিক্ষোভকারী নিহতের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। সংস্থাটি জাতিসংঘের প্রতি ইরানের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে। এমনকি নিহতের ঘটনা আরও বাড়তে পারে, এমন শঙ্কা জানিয়ে তেহরানের বিষয়ে অবিলম্বে বিশেষ একটি অধিবেশনের আহ্বানও জানায় সংস্থাটি।
বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। ইরান আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করছে বলেও দাবি জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার।
জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি বলেন, ‘মানবাধিকার লঙ্ঘন করে আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গ করছে তেহরান। আমরা খবর পেয়েছি অনেক বিক্ষোভকারীর পরিবারকে হয়রানি করছে ইরানের পুলিশ। এমনকি বিক্ষোভে নিহত অনেকের মরদেহ ফেরত দেয়া হচ্ছে না। শিগগিরই আমাদের পক্ষ থেকে দেশটির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
গত ১৬ সেপ্টেম্বর ইরানের পুলিশি হেফাজতে মারা যান কুর্দি তরুণী মাহসা আমিনি। এরপর থেকেই সহিংস বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে দেশটিতে।