• আজকের পত্রিকা
  • ই-পেপার
  • আর্কাইভ
  • কনভার্টার
  • অ্যাপস
  • অনুর্বর জমির পরিমাণ বাড়ছে দেশে 

     obak 
    10th Sep 2022 1:59 am  |  অনলাইন সংস্করণ

    নিউজ ডেস্ক:দেশে অনুর্বর জমির পরিমাণ বাড়ছে। বিগত ২০০০ সালে দেশে উর্বরতার ঘাটতিযুক্ত জমির পরিমাণ ছিল ১ কোটি ১০ লাখ হেক্টর। পরবর্তী দু’দশকে ওই তালিকায় আরো প্রায় এক লাখ হেক্টর ভূমি যুক্ত হয়েছে। ২০২০ সালের মধ্যে দেশে উর্বরতা বা পুষ্টি ঘাটতিযুক্ত ভূমির পরিমাণ ১ কোটি ১১ লাখ হেক্টরে দাঁড়ায়, যা দেশের মোট জমির প্রায় ৭৫ শতাংশ। মাটির উর্বরতা শক্তি অক্ষুণœ থাকতে পর্যাপ্ত নাইট্রোজেন, ফসফরাস, পটাশিয়াম, সালফার, বোরন ও জিংক প্রয়োজন। মাটিতে ওসব উপাদানের যেকোনোটির উপস্থিতি পর্যাপ্ত না হলে উৎপাদন ঘাটতি ও খাদ্যের গুণগত মানে নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি হয়। বর্তমানে দেশের মোট ভূমির প্রায় ৭৫ শতাংশই উর্বরতা ঘাটতিতে ভুগছে। আর কৃষকরা অনুর্বর ভূমি থেকে প্রত্যাশা অনুযায়ী উৎপাদন না পেয়ে রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের ওপর বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। তাতে বৃষ্টি বা বন্যার পানিতে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ছে ওসব রাসায়নিকের অপ্রয়োজনীয় ও ক্ষতিকর উপাদানগুলো। ফলে একদিকে পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে, অন্যদিকে মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। মৃত্তিকা গবেষণা উন্নয়ন ইনস্টিটিউট (এসআরডিআই) সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
    সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বিগত ২০০১ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত সময়ে দেশের ভূমির পুষ্টি উপাদানের প্রায় সবক’টিরই অবনতি হয়েছে। ১২ লাখ ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে এ সময়ে ফসফরাসের ঘাটতি বেড়েছে। ১৪ লাখ ১০ হাজার হেক্টর জমিতে বেড়েছে পটাশিয়ামের ঘাটতি। ১১ লাখ ১০ হাজার হেক্টর জমিতে বেড়েছে সালফারের ঘাটতি। জিংকের ঘাটতি ২৪ লাখ ৯০ হাজার হেক্টর জমিতে বেড়েছে। ২২ লাখ ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে বেড়েছে বোরনের অভাব। তাছাড়া ১ কোটি ১৬ লাখ ২০ হাজার হেক্টর বা প্রায় ৭৮ দশমিক ৭০ শতাংশ জমিতে জৈব পদার্থের ঘাটতি রয়েছে। দেশের ৪৫০টি উপজেলার তথ্য নিয়ে এসআরডিআই ওই গবেষণা চালায়। গবেষণায় মাটির উর্বরতা বা পুষ্টি গুণাগুণ নির্ধারণের জন্য ফসফরাস, পটাশিয়াম, সালফার, জিংক ও বোরনের তথ্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ৪৫ হাজারেরও বেশি নমুনা পয়েন্ট থেকে মাটির নমুনা সংগ্রহ করা হয়। ওসব নমুনা বিশ্লেষণে দেখা যায় ৪২ লাখ ৫০ হাজার হেক্টর ভূমিতে পুষ্টির গুরুতর ও অতি গুরুতর ঘাটতি রয়েছে, যা মোট ভূমির ২৮ দশমিক ৮ শতাংশ। আর ৪৬ দশমিক ২ শতাংশ ভূমিতে পুষ্টির মাঝারি ও নিম্ন ঘাটতি রয়েছে।
    সূত্র জানায়, দেশের ৭৮ লাখ ৩০ হাজার হেক্টর ভূমিতে ফসফরাসের ঘাটতি রয়েছে। যা মোট ভূমির প্রায় ৫৩ দশমিক ১ শতাংশ। আর প্রায় ৬৬ লাখ ৮০ হাজার হেক্টর বা ৪৫ দশমিক ৩ শতাংশ জমিতে পটাশিয়ামের ঘাটতি রয়েছে। প্রায় ৭৬ লাখ ৪০ হাজার হেক্টর বা ৫১ দশমিক ৮ শতাংশ জমির সালফারের ঘাটতি। তাছাড়া প্রায় ৮০ লাখ ৪০ হাজার হেক্টর বা ৫৪ দশমিক ৫ শতাংশ ভূমিতে জিংকের ঘাটতি এবং প্রায় ৭৩ লাখ ৬০ হাজার হেক্টর বা প্রায় ৫০ শতাংশ ভূমিতে বোরনের ঘাটতি রয়েছে।
    এদিকে মৃত্তিকা বিজ্ঞানীদের মতে, ভূমির পুষ্টি উপাদানগুলোর মধ্যে যদি কোনো একটি উপাদান নির্দিষ্ট পরিমাণ না থাকে, তাহলে ফসলের উৎপাদন কমে যাবে। ভূমির কোনো একটি উপাদান প্রয়োজনের তুলনায় বেশি বাড়ালেও আরেকটি উপাদান অপর্যাপ্ত থাকলে ওই অপর্যাপ্ত উপাদানটিই ফলনের পরিমাণ নির্ধারণ করবে। মাটিতে সব উপাদানই পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকতে হবে। মাটির পুষ্টি ঠিক রাখতে সার ব্যবহার করা হয়। তাতে ফলন বাড়লেও ফলনের গুণগত মানে প্রভাব ফেলে। যদিও মাটির উপাদান ঘাটতির কারণে দেশে চাষের পরিমাণে অবনতি হবে না। কারণ ক্ষুধা নিবারণের জন্য প্রধান লক্ষ্যই হচ্ছে চাষের পরিমাণ বাড়ানো। অনেক ক্ষেত্রেই মাটির উপাদানের ঘাটতি পূরণ করতে প্রয়োজনের অতিরিক্ত সার প্রয়োগ করা হয়। তাতে চাষের খরচ বাড়ার পাশাপাশি পরিবেশ ও মানুষের স্বাস্থ্যে মারত্মকভাবে প্রভাব ফেলছে। তবে মাটির গুণগত মান পরীক্ষা করে সুষম সার প্রয়োগের মাধ্যমে ভূমির পুষ্টি ঘাটতি রোধ করা সম্ভব। তাছাড়া ভূমিতে রাসায়নিক সারের নির্ভরতা কমিয়ে জৈব সারের প্রয়োগ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ মাটির পুষ্টি উপাদানের প্রত্যেকটিই গুরুত্বপূর্ণ। টেকসই কৃষি উৎপাদনশীলতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ফসফরাস। যা বীজের অঙ্কুরোদ্গম, চারা রোপণ, মূল, অঙ্কুর ও বীজের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আর পটাশিয়াম রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। সালফার উদ্ভিদের বৃদ্ধি ও বিকাশের সহায়তা করে। এ উপাদানটির ঘাটতি দেখা দিলে ফসলের পরিপক্বতার সময় বেড়ে যায়, মানও কমে যায়। আর বোরন উদ্ভিদের কোষ প্রাচীর গঠন এবং স্থিতিশীলতা রক্ষায় ভূমিকা রাখে। এসব উপাদানের অভাব পূরণে অতিরিক্ত সার ব্যবহার পরিবেশে বিরূপ প্রভাব ফেলবে। ফসফরাস ও পটাশিয়াম পানিতে মিশে গিয়ে মানুষ ও প্রাণীর স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ হয়। আবার বোরন শিশুদের জন্য ঝুঁকি তৈরি করে।
    অন্যদিকে এ বিষয়ে কৃষি সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম জানান, মাটির পুষ্টি উপাদান ঠিক রাখতে আরো জনসচেতনতা বাড়ানো দরকার। পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি থাকলে কোন এলাকায় কী পরিমাণ সার প্রয়োগ করতে হবে তার নির্দেশনা দেয়া আছে। কিন্তু সব ক্ষেত্রে সেগুলো মানা হচ্ছে না। ফলে সেগুলো ভূগর্ভস্থ পানি বা খাল-বিল, নদী-নালায় মিশে স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করছে। সারের অপব্যবহার সম্পর্কে সবাইকে সচেতন হতে হবে।

    আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
    এই বিভাগের আরও খবর
     
    Jugantor Logo
    ফজর ৪:২৭
    জোহর ১২:০৫
    আসর ৪:২৯
    মাগরিব ৬:২০
    ইশা ৭:৩৫
    সূর্যাস্ত: ৬:২০ সূর্যোদয় : ৫:৪২

    আর্কাইভ

    September 2022
    M T W T F S S
     1234
    567891011
    12131415161718
    19202122232425
    2627282930