• আজকের পত্রিকা
  • ই-পেপার
  • আর্কাইভ
  • কনভার্টার
  • অ্যাপস
  • কম দামে বাংলাদেশের অর্ধেক পশুর চামড়াই কিনে নিচ্ছে চীন 

     obak 
    04th Aug 2022 12:26 am  |  অনলাইন সংস্করণ

    নিউজ ডেস্ক:কম দামে বাংলাদেশের অর্ধেক পশুর চামড়া কিনে নিচ্ছে চীন। মূলত পরিবেশের কারণে এদেশের ট্যানারিগুলোর চামড়ার ভালো দাম পাওয়া যাচ্ছে না। বিশ্বের চামড়াজাত পণ্যের বড় বড় ব্র্যান্ড ইউরোপ-আমেরিকার ক্রেতারা চামড়া কেনার সময় তার মান, ট্যানারিগুলোর পরিবেশ ও ব্যবস্থাপনা ঠিকঠাক রয়েছে কিনা তাতে গুরুত্ব দেয়। সেজন্য ট্যানারির লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপের (এলডব্লিউজি) সনদ থাকা লাগে। কিন্তু এদেশের একটিমাত্র প্রতিষ্ঠানের পূর্ণাঙ্গ সনদ আছে। যে কারণে চামড়ার মান ভালো হওয়ার পরও বিশ্ববাজারে বাংলাদেশ পিছিয়ে রয়েছে। আর ওই সুযোগ কাজে লাগিয়ে চীনের কোম্পানিগুলো কম দামে এদেশ থেকে চামড়া কিনে নিয়ে যাচ্ছে। কারণ ওই সনদের এত গুরুত্ব দেয় না চীন। বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএ) সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
    সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৭০ শতাংশ চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যই বিদেশে রপ্তানি হয়। আর শুধুমাত্র চীনেই রপ্তানির চামড়ার অর্ধেক যাচ্ছে। বাকি ৩০ শতাংশ দেশের স্থানীয় শিল্পে ব্যবহার হয়। রপ্তানিযোগ্য চামড়ার মধ্যে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ভিয়েতনাম এবং ইউরোপের ৩টি দেশ ইংল্যান্ড, ইতালি ও পর্তুগালে সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয়। তাছাড়াও আরো কয়েকটি দেশেও কিছু চামড়া যায়। কিন্তু ওসব দেশ মিলে যে পরিমাণ চামড়া রপ্তানি হয়, তার সমপরিমাণ অথবা কিছুটা বেশি চামড়া শুধু চীনে রপ্তানি হয়। আর ওসব দেশের তুলনায় চীনে চামড়ার দাম অর্ধেকেরও কম।
    সূত্র জানায়, বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা বাধ্যই হয়েই কম দামে চীনে চামড়া রপ্তানি করছে। যদিও বর্তমানে করোনার প্রভাব কাটিয়ে ইউরোপ ও আমেরিকার বিভিন্ন দেশে চামড়াজাত পণ্যের বিক্রি বেড়েছে। সেজন্য বিশ্ববাজারে দামও চড়া। কিন্তু এদেশ থেকে অর্ধেক চামড়া খুব কম দামে নিয়ে যাচ্ছে চীন। বিশ্ববাজারে চামড়ার দাম বাড়ার সুবিধা এদেশের অধিকাংশ রপ্তানিকারকই নিতে পারে না। মূলত এলডব্লিউজি সনদ না থাকায় পশ্চিমা দেশগুলোতে আশানুরূপ চামড়া রপ্তানি হচ্ছে না। আগে ওসব দেশে যারা চামড়া রপ্তানি করতো সেসব দেশের ব্র্যান্ডগুলো এখন এলডব্লিউজি সনদ বাধ্যতামূলক করেছে। ফলে এদেশের অর্ডার বাতিল হয়ে যাচ্ছে। ইউরোপে যেখানে প্রতি বর্গফুট চামড়া ২ ডলার ৮০ সেন্ট (১০০ সেন্ট এ ১ ডলার), চীনে তা ৯০ সেন্ট থেকে ১ ডলার ২০ সেন্টে বিক্রি করতে হচ্ছে।
    সূত্র আরো জানায়, বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার পরও গত অর্থবছরে দেশ থেকে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি বেশ বেড়েছে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যানুযায়ী গত ২০২১-২২ অর্থবছর বাংলাদেশ ১২৪ কোটি ৫২ লাখ ডলারের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি করেছে। আগের অর্থবছরের থেকে রপ্তানিতে ৩২ দশমিক ২৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানি বেশ কয়েক বছর পর শত কোটির ঘরে পৌঁছেছে। পরিবেশ দূষণের কারণে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের পর ওই খাতের রপ্তানি কমতে থাকে। টানা ২ বছর রপ্তানি শত কোটি ডলারের নিচে থাকার পর বিদায়ী অর্থবছরে খাতটি আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। কাঁচা চামড়ার পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকে চামড়ার তৈরি পাদুকা, বেল্ট, মানিব্যাগ, নানা ধরনের লেডিস ব্যাগ, বিভিন্ন ধরনের বাক্স, জ্যাকেট, হ্যান্ডগ্লাভস, গাড়িতে ব্যবহৃত জিনিসপত্র রপ্তানি হচ্ছে। আর সেগুলো দেশের হাতেগোনা কিছু প্রতিষ্ঠানের ফিনিশড লেদারে (প্রক্রিয়াজাত) প্রস্তুত হচ্ছে। আবার অনেক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি করা ওয়েটব্লু চামড়া ফিনিশড লেদার হিসেবে পুনরায় বাংলাদেশে ফিরে আসছে। আর দেশি কোম্পানিগুলো দ্বিগুণ দামে কিনে সেগুলো দিয়ে পণ্য বানাচ্ছে।
    এদিকে চামড়া খাত সংশ্লিষ্টদের মতে, বিশ্বের বড় বড় ব্র্যান্ডের কাছে চামড়া ও পণ্য রপ্তানি সম্ভব হলে ২০৩০ সালের মধ্যে চামড়া খাত থেকে ১০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয় সম্ভব। সেজন্য ওই খাতের কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করতে হবে। সাভারের চামড়া শিল্পনগরীতে কেন্দ্রীয় বর্জ্য পরিশোধনাগার বা সিইটিপি আন্তর্জাতিক মানে উত্তীর্ণ করতে হবে। পাশাপাশি কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনাও ঠিকঠাক করা জরুরি। সেজন্য সরকারের পক্ষ থেকে ট্যানারিগুলোকে নীতিসহায়তা দিতে হবে। ট্যানারিগুলোর পরিবেশ ও ব্যবস্থাপনার সমস্যা কেটে গেলে দেশের চামড়া খাত চূড়ান্ত সম্ভাবনাময় হয়ে উঠবে।
    অন্যদিকে এ প্রসঙ্গে বিটিএ’র সাধারণ সম্পাদক মো. সাখাওয়াত উল্লাহ জানান, শুধু কমপ্লায়েন্স ইস্যু ঠিক না থাকার কারণে এদেশের ব্যবসায়ীরা বাধ্য হয়ে চীনের সিন্ডিকেট মার্কেটে পড়ে থাকছে। বিশ্বব্যাপী অবারিত উৎস থাকার পরও তা কাজে লাগাতে পারছে না। চামড়া শিল্পের বৈশ্বিক মান সনদ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপ (এলডব্লিউজি) থেকে সনদ পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে এদেশের ব্যবসায়ীরা বড় বাজার ধরতে ব্যর্থ হচ্ছে। আবার স্থানীয় বাজারেও চামড়ার ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না।
    এ বিষয়ে বিটিএ’র সভাপতি শাহীন আহমেদ জানান, বিগত ২০১৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে ইউরোপ ও আমেরিকার বড় বড় ব্র্যান্ড চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য নিয়েছে। তারপর এলডব্লিউজির কারণে ওসব ক্রেতা এদেশের চামড়া পণ্য নিচ্ছে না। তবে প্রতি বছর চামড়াজাত পণ্যের চাহিদা বাড়ছে। পণ্য তৈরির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি করা ওয়েটবব্লু চামড়া পুনরায় ফিনিশড লেদার হিসেবে বাংলাদেশে ফিরে আসছে। তখন তা দ্বিগুণ দামে কিনতে হচ্ছে। শুধুমাত্র কমপ্লায়েন্সের অভাবে এমনটা হচ্ছে।

    আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
    এই বিভাগের আরও খবর
     
    Jugantor Logo
    ফজর ৪:২৭
    জোহর ১২:০৫
    আসর ৪:২৯
    মাগরিব ৬:২০
    ইশা ৭:৩৫
    সূর্যাস্ত: ৬:২০ সূর্যোদয় : ৫:৪২

    আর্কাইভ

    August 2022
    M T W T F S S
    1234567
    891011121314
    15161718192021
    22232425262728
    293031