সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি : গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিপাত আর সীমান্তের ওপার থেকে পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকায় বাংলাদেশের সিলেট ও সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। সিলেটের প্রায় ১৩টি উপজেলাই এখন বন্যাকবলিত। সুনামগঞ্জের সীমান্তবর্তী পাঁচ উপজেলায় পানি বাড়ছে। ভারতের বরাক নদ থেকে প্রবল বেগে পানি এখন সুরমা ও কুশিয়ারা নদীতে গিয়ে ঢুকছে।
এ অবস্থায় চরম দুর্ভোগে রয়েছেন দেশের উত্তর-পুর্বাঞ্চলের কয়েক লক্ষ পানিবন্দি মানুষ। খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে বন্যাদূর্গত এলাকায়। ইতোমধ্যে সিলেট মহনগরের ১২টি ওয়ার্ডের অর্ধেক পানিতে তলিয়ে গেছে। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে নদী তীরবর্তী এলাকাগুলোতে ১৮টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে
প্রায় ৫০ হাজার পরিবার বিদ্যুৎহীন। হাজারো পরিবারে গ্যাস নেই। নগরীতেই ঘরে মাচা বেঁধে বসবাস করছেন বন্যার্তরা। বিশুদ্ধ পানি, স্যানিটেশন ব্যবস্থাও নেই।
ওদিকে, পানির চাপে ভেঙে গেছে সুনামগঞ্জ-দোয়ারাবাজার সড়কের রামনগর ব্রীজটি। সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সকালে সুনামগঞ্জ পৌর শহরের ষোলঘর পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও জেলার সবকটি ছোট বড় নদ-নদীর পানি বিপৎসীমা উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার অমলশিদ এলাকায় সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর উৎসস্থলে নদী প্রতিরক্ষা বাঁধের একটি অংশ ভেঙে গেছে। এতে প্রবল বেগে পানি ঢুকে জকিগঞ্জের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছে।
এদিকে, বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, দেশের অধিকাংশ নন-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ফলে আগামী দু’-এক দিনের মধ্যে উত্তরের জেলাগুলিতে স্বল্পমেয়াদি বন্যা সৃষ্টি হতে পারে।
হঠাৎ করেই অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে রাজবাড়ীর পদ্মা নদীর পানি। গত ২৪ ঘণ্টায় পদ্মার পানি ৮০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। যার প্রভাব পড়েছে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে। পানি বৃদ্ধির ফলে তলিয়ে গেছে দৌলতদিয়া ৪ ও ৫ নম্বর ফেরিঘাটের পন্টুন। এতে ঘাট এলাকায় দেখা দিয়েছে দীর্ঘ যানজট।