আমাদের সুগন্ধী আতপ চালের পোলাও যখনই সুযোগ এসেছে ভিনদেশি বন্ধুদের চিকেন কোর্মা বা রোস্ট দিয়ে যতবার খেতে দিয়েছি সবাই শুধু বলেছে এই রকম মজার কোন খাবার হয় তাঁদের জানাই ছিল না। সুযোগ এলেই যেন আবার করি। আমাদের আগ বাড়িয়ে বলতে হয়, এই চাল শুধুই আমাদের। আমাদের বলতে হয় এই খাবারগুলো শুধুই বাঙালির, বাংলাদেশিদের। এইগুলো ভারতীয় বা অন্য এশিয়ান খাবার থেকে আলাদা।
কিশোয়ার শুরু থেকেই ভীষণ রকমের আবেগী হয়ে অনেকবারই তার ছোট ছোট প্রকাশে চোখ ভিজিয়েছে, অনেকবার তার সেই প্রকাশ বিচারকদেরও ছুঁয়ে গেছে এবং সবটুকু একাত্মতা প্রকাশও করেছে। তার কণ্ঠের উপচে পড়া আবেগ ছলছল চোখের মানে আমাদের মত সকল প্রবাসী পরবাসীদের খুব জানা, আমরাই জানি কেন ভেজে চোখ যখন তখন!
এই গল্পগুলো বোধ হয় প্রবাসে থাকা অনেকেরই গল্প। থাক এই গল্প তোলা আজ। বলতে এলাম, হঠাৎ অস্ট্রেলিয়া থাকা বাংলাদেশীদের সামনে ঘটে যাওয়া এই খাবার নিয়েই যা রচিত হয়ে গেল, সেই গল্প। যার নাম ‘’কিশোয়ার চৌধুরী’’। মাস্টার শেফ অস্ট্রেলিয়া ২০২১ এ অংশ নেয়া একজন হয়েই তিনি নিজেই হয়ে উঠেছেন এক গল্প।
যাদের জানা নেই, ছোট করে বলে নেই ভূমিকাটা। কিশোয়ার চৌধুরী, বাংলাদেশি বাবা, মুক্তিযোদ্ধা কামরুল চৌধুরী এবং বাঙালি মা লায়লা চৌধুরীর অস্ট্রেলিয়ান বাংলাদেশি মেয়ে। যে থাকে আমি যে শহরে আছি সেখানেই। মেলবোর্ন, ভিক্টোরিয়া। মূলতঃ তিনি বাবার বিশাল প্রিন্টিং বিজনেস দেখাশুনা করেন এবং রান্না নিয়ে পরিবার থেকেই পেয়েছেন সকল অনুপ্রেরণা। আগ্রহ ছিল বিশেষভাবে বাংলা খাবারে। যখনই দেশে বেড়াতে গেছেন তখনই দেখেছেন খুব কাছ থেকে এবং সেই বিয়ের পর যখন বরকে নিয়ে বেড়াতে গেছেন রাঙ্গামাটি সেখানে গিয়ে খেয়েছেন এমন একটি আইটেমও তিনি তুলে নিয়ে এসেছেন রান্নার এই প্রতিযোগিতায়।
ফাইনাল পর্বটি ছিল দুইদিন ব্যাপী। মূল বিচারক তিন জন ছাড়াও সাথে যোগ দেন বিভিন্ন সময় সেরা মাস্টারশেফসহ আরো অনেক নামকরা শেফ, তাঁদের আনা কোন না কোন উপকরণ এবং লটারির মাধ্যমে উঠিয়ে আনতে হয়েছে রান্নার মাধ্যম ও নিজস্ব কোন আইটেম। এরই এক পর্বে সেরা ডিশের একটি ছিল, আলু ভর্তা, পান্তা ভাত, যাকে স্মোকি রাইস বলা হয়েছে, সাথে সার্টিন মাছ ভাঁজা, সরিষার তেলে পেঁয়াজ কাঁচা মরিচের অপরূপ গার্নিস… যা তিন বিচারকের কাছে দশে দশ পেয়ে পুরো ৩০ পেয়েছে এবং প্রথম পর্বের পর তার প্রাপ্ত মূল নাম্বারে সে ছিল দ্বিতীয় অবস্থানে।
Array