অনলাইন ডেস্ক: দেশের রাষ্ট্র কাঠামো ও রাজনৈতিক সংস্কার প্রক্রিয়ার গুরুত্বপূর্ণ দলিল ‘জুলাই সনদ’ আগামী বুধবার (১৫ অক্টোবর) জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় স্বাক্ষরিত হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস এই ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানে নেতৃত্ব দেবেন।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) জাতীয় সংসদ ভবনের ঐকমত্য কমিশন কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত কমিশনের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হয়। সভায় কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে জানানো হয়, জুলাই সনদের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কমিশনের পাঁচ দফা সংলাপে প্রাপ্ত মতামত ও বিশেষজ্ঞদের বিশ্লেষণ পর্যালোচনা করা হয়েছে। বৈঠকের পর কমিশনের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, খুব শিগগিরই বাস্তবায়নের উপায় ও সুপারিশসহ চূড়ান্ত সনদ সরকারে জমা দেওয়া হবে।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১৫ অক্টোবর বেলা ৩টায় অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন ৩০টি রাজনৈতিক দল ও জোটের প্রতিনিধি। কমিশন ইতিমধ্যে অংশগ্রহণকারী দলগুলোকে তাদের প্রতিনিধিদের নাম পাঠানোর অনুরোধ জানিয়েছে। অধিকাংশ দল প্রতিনিধি তালিকা জমা দিয়েছে বলে কমিশন সূত্রে জানা গেছে।
প্রথমে অনুষ্ঠানটি চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে করার পরিকল্পনা থাকলেও প্রধান উপদেষ্টার পরামর্শে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে প্রতিটি দল থেকে দুইজন করে প্রতিনিধি ছাড়াও বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতা ও বিশিষ্ট নাগরিককে আমন্ত্রণ জানানো হবে।
কমিশনের পক্ষ থেকে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও অন্যান্য দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে এবং তারা ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার বলেন, “সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক দলগুলো উপস্থিত থাকবে—এ বিষয়ে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ চলছে এবং সবাই ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেছে।” তিনি জানান, শনিবার (১১ অক্টোবর) অনুষ্ঠানের আয়োজন চূড়ান্ত করতে কমিশন আবার বৈঠকে বসবে।
রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারে গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশন দুই ধাপে দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল ও জোটগুলোর সঙ্গে সংলাপ করে। সংলাপ থেকে প্রাপ্ত অভিমতের ভিত্তিতেই ‘জুলাই জাতীয় সনদ’ প্রণয়ন করা হয়েছে। তবে সনদের বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে এখনো কিছু দলীয় মতপার্থক্য রয়ে গেছে। কমিশনের সদস্যরা আশা প্রকাশ করেছেন, স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সেই মতপার্থক্য নিরসনের পথ খুলবে এবং একটি ঐকমত্যভিত্তিক জাতীয় সংস্কার প্রক্রিয়া শুরু হবে।