সুদের টাকার জন্য দিনমজুরকে নির্যাতন

নিউজ ডেস্ক: শেরপুরে সুদের টাকার জন্য গাছের সঙ্গে বেঁধে এক দিনমজুরকে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভুক্তভোগী সাইফুল ইসলাম (২৪) সদর উপজেলার চক আন্ধারিয়া সূতারবাড়ি এলাকার মৃত হানিফ উদ্দিনের ছেলে।

নির্যাতনের খবর পেয়ে সোমবার (৫ জুন) সকালে সাইফুলকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তরা পলাতক রয়েছেন বলে জানিয়েছেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বছির আহম্মেদ বাদল।


আহত সাইফুল ইসলাম জানান, আমি এতিম। ঢাকায় দিন মজুরি করে দিন চালাই। ৪ মাস আগে আব্দুল মালেক (৪০) মিয়ার স্ত্রী দাদন ব্যবসায়ী নারগিস আক্তারের কাছ থেকে ৬ হাজার টাকা সুদে নেই। রোববার (৪ জুন) রাতে আসলসহ ৬ হাজার টাকা পরিশোধ করে দেই। কিন্তু তারা আরও ছয় হাজার টাকা দাবি করে। দিতে না পারার জন্য জন্য সময় চাই। কিন্তু নারগিস দম্পতি তা মানেনি।
একপর্যায়ে আমাকে মালেকের সহোদর ভাই মনির হোসেন (৩২) ও তাদের চাচাতো ভাই জুয়েল (৩০) তুলে নিয়ে গিয়ে মালেকের বাড়ি উঠোনের গাছের সঙ্গে বেঁধে রাতভর নির্যাতন চালায়। তারা আমাকে প্রচুর মারধর করে। একটা আঙুলও ভেঙে দেয়। আমাকে গরুর মতো মেরেছে। পরে সকালে পুলিশ এসে আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। পুলিশ সময় মতো না আসলে তারা আমাকে মেরেই ফেলতো। আমি এতিম মানুষ, এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।

সাইফুলের বড় বোন হাজেরা বেগম সময় সংবাদকে জানান, আমার ছোটভাইকে লাভের টাকার জন্য এভাবে গাছে বেধে মেরেছে। মানুষ গরুকেও এভাবে মারে না। আমাদের বাবা নেই। ওরা প্রভাবশালী, ওদের অত্যাচারে মানুষ অতিষ্ঠ। আমি এ ঘটনায় সুদ কারবারি মালেক, মনির, জুয়েল ও নারগিসের বিচার চাই।


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, আব্দুল মালেক তার স্ত্রীকে দিয়ে সুদের ব্যবসা চালায়। চড়া লাভ দিতে না পারলে ঝগড়া করে। সাইফুলকে এভাবে গাছে বেঁধে মারধরের ঘটনায় আমরাও বিস্মিত। এ ঘটনার সঠিক বিচারের দাবিও জানান তারা।

অভিযুক্ত নারগিস আক্তার বলেন, আসল ছয় হাজার টাকাও দিতে সাইফুল টালবাহানা করে আসছে। লাভ তো দিচ্ছেই না। আসল টাকা দিতে চাইলেও সে ফোনে আমাকে কু-প্রস্তাব দেয়। পরে আমার স্বামী ও দেবররা মিলে তাকে ধরে এনে ঘরে আটকিয়ে রাখে ও পরে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করে।

শেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বছির আহমেদ বাদল জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা দেয়। এ ঘটনায় তিনজনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত আছে। দ্রুত আসামিদের গ্রেফতার করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *