সাঈদীর পক্ষে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে গুমের অভিযোগ সুখরঞ্জন বালির

অনলাইন ডেস্ক: জামায়াত নেতা আল্লামা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীর মামলার আলোচিত সাক্ষী সুখরঞ্জন বালি অভিযোগ করেছেন, তাকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার করে গুম ও নির্যাতনের ঘটনা ঘটানো হয়েছিল। এ বিষয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগপত্র জমা দেন বালি। তার অভিযোগে সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা, ট্রাইব্যুনালের তৎকালীন চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম, সাবেক আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ, সাবেক প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, বিচারপতি এটিএম ফজলে কবির, সাবেক প্রসিকিউটর রানা দাসগুপ্ত, তৎকালীন তদন্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিনসহ মোট ৩২ জনের নাম উল্লেখ রয়েছে।

অভিযোগে বলা হয়, সাঈদীর বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা ছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। রাষ্ট্রপক্ষ তাকে মিথ্যা সাক্ষ্য দিতে চাপ দিয়েছিল। কিন্তু সাঈদীর পক্ষে সাক্ষ্য দেওয়ায় তাকে আদালত চত্বর থেকেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তুলে নেয়। এরপর দীর্ঘদিন ভারতে অবৈধভাবে কারাবন্দি রেখে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হয়। তার দাবি, এই ঘটনা আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী মানবতাবিরোধী অপরাধ।

সুখরঞ্জন বালি সাংবাদিকদের বলেন, “আমি সত্যের পক্ষে দাঁড়িয়েছিলাম বলেই আমাকে অপহরণ ও নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে আমার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময় বন্দিদশায় কাটাতে হয়েছে। আজ ন্যায়বিচারের জন্য আমি ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ তুললাম।”

রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম জানান, বালি তার লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন এবং এতে গুম, অপহরণ, আটকে রাখা ও ভারতে দীর্ঘদিন কারাবন্দি থাকার বিষয়গুলো স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন।

উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ৫ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিতে এসে নিখোঁজ হন সুখরঞ্জন বালি। পরে তাকে ভারতের একটি কারাগারে পাওয়া যায় বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো জানায়। প্রায় পাঁচ বছর কারাভোগের পর তিনি দেশে ফিরে আসেন। দীর্ঘ সময় আত্মগোপনে থাকার পর অবশেষে আবারও প্রকাশ্যে এসে ন্যায়বিচারের জন্য আনুষ্ঠানিক অভিযোগ করলেন এই আলোচিত সাক্ষী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *