শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল ইন্দোনেশিয়ার সুলাওয়েসি, আহত অন্তত ২৯

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়ার সুলাওয়েসি দ্বীপে আঘাত হেনেছে শক্তিশালী ভূমিকম্প। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৬। রোববার (১৭ আগস্ট) ভোরে হওয়া এই ভূমিকম্পে অন্তত ২৯ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। দেশটির জাতীয় দুর্যোগ প্রশমন সংস্থা (বিএনপিবি) জানিয়েছে, আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং জরুরি তৎপরতা চালানো হচ্ছে।

ভূমিকম্পটি স্থানীয় সময় ভোরে অনুভূত হয় এবং ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার গভীরে এর উৎপত্তি ঘটে। যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানায়, ভূমিকম্পটির কেন্দ্রস্থল ছিল পোসো জেলার উত্তর দিকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে। প্রধান কম্পনের পর অন্তত ১৫ বার আফটারশক অনুভূত হয়েছে। তবে কোনো সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়নি।

স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, ভূমিকম্পের সময় অনেকে আতঙ্কে ঘর ছেড়ে বাইরে ছুটে আসেন। পসো অঞ্চল এবং আশপাশের এলাকায় বেশ কিছু ঘরবাড়িতে ফাটল দেখা গেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওচিত্রে গির্জার কাঠামোগত ক্ষতির দৃশ্যও ধরা পড়ে। দুর্ঘটনার সময় আহতদের অনেকেই গির্জায় সকালের প্রার্থনায় উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গেছে।

বিএনপিবি’র মুখপাত্র আবদুল মুহারি জানান, ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক মূল্যায়ন চলছে এবং দুর্গত এলাকায় ত্রাণ ও জরুরি সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। এখন পর্যন্ত কোনো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি।

ইন্দোনেশিয়া প্রায় ২৭ কোটিরও বেশি মানুষের দেশ, যা ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল প্রশান্ত মহাসাগরীয় “রিং অব ফায়ার”-এর অন্তর্ভুক্ত। এই ভৌগোলিক কারণে দেশটিতে প্রায়ই ভূমিকম্প, আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত ও সুনামি দেখা দেয়। ২০২২ সালে পশ্চিম জাভায় ৫ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্পে অন্তত ৬০২ জনের প্রাণহানি ঘটে। তার আগে ২০১৮ সালে সুলাওয়েসিতেই ভয়াবহ ভূমিকম্প ও সুনামিতে ৪ হাজার ৩০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়। আর ২০০৪ সালে সুমাত্রার উপকূলে ৯ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্প ও সুনামিতে কেবল ইন্দোনেশিয়াতেই প্রাণ হারান প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার মানুষ।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সুলাওয়েসিসহ ইন্দোনেশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে টেকটোনিক প্লেটের সংঘর্ষ ঘটে বলে দেশটি সবসময় বড় মাত্রার ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে থাকে। এই ঝুঁকিতে রয়েছে জাপান, ফিলিপাইন ও মালয়েশিয়ার মতো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য দেশও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *