রাজধানীর শনির আখড়ায় বাজার ভাড়া নিয়ে প্রতারণা ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানাধীন শনির আখড়ায় বাজার ভাড়া নিয়ে প্রতারণা, অর্থ আত্মসাৎ ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ উঠেছে খাঁন মোঃ ইকবাল হোসেন ও মোঃ শাহজাহান শিকদার নামের দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মোঃ জামাল হোসেন আদালতে মামলা দায়ের করেছেন।

ভুক্তভোগী মোঃ জামাল হোসেন, পিতা মৃত হাজী আঃ আউয়াল, মাতা মৃত বেগম রোকেয়া, সাং- খাককান্দা, পোষ্ট: ভুরবুরিয়া, থানা: বাঞ্ছারামপুর, জেলা: ব্রাহ্মণবাড়িয়া, বর্তমানে বসবাস করছেন গোবিন্দপুর, যাত্রাবাড়ী, ঢাকায়।

জানা যায়, ২০২০ সালের ১লা মার্চ তারিখে একটি লিখিত চুক্তির মাধ্যমে তিনি যাত্রাবাড়ী বড় বাজারের (তফসিল: হোল্ডিং ১/২৯, গোবিন্দপুর বড় মার্কেট, ওয়ার্ড নং-৬২, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১২৩৬) পজেশন ভাড়া নেন খাঁন মোঃ ইকবাল হোসেনের কাছ থেকে। ভাড়ার শর্ত অনুযায়ী, তিনি অগ্রিম ১৭ লক্ষ টাকা প্রদান করেন এবং মাসিক ভাড়া নির্ধারিত হয় ২ লক্ষ টাকা করে, মেয়াদ ৫ বছর।
পরবর্তীতে প্রবাসে অর্জিত টাকা, দার-দেনা ও গ্রামের সম্পত্তি বিক্রি করে তিনি বাজারে “নবীন প্রবীন ট্রাস্ট” এর সহযোগিতায় একটি মেগা শপ নির্মাণ করেন। ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে দৈনিক ও মাসিক ভাড়ার ভিত্তিতে বাজারটি জমজমাট হয়ে ওঠে।

এসময় ভুক্তভোগী মোঃ জামাল হোসেন বাজারের একটি দোকানঘর মোঃ আমির হোসেনের নিকট ৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকায় অগ্রিম ভাড়া দেন এবং প্রাপ্ত অর্থ পূর্বের জামানত পরিশোধে ব্যবহার করেন।

কিন্তু ২০২০ সালের ১৯ ডিসেম্বর খাঁন মোঃ ইকবাল হোসেনের লোকজন দলবদ্ধভাবে এসে মোঃ জামাল হোসেনকে প্রাণনাশের ভয়ভীতি দেখিয়ে জিম্মি করে মোঃ শাহজাহান শিকদার নামে এক ব্যক্তির হাতে লিখিতভাবে বাজারের দায়িত্ব হস্তান্তর করতে বাধ্য করে। অভিযোগ রয়েছে, শাহজাহান শিকদার নিজেই একটি কাগজ তৈরি করে তাতে জোরপূর্বক স্বাক্ষর করিয়ে নেয় জামাল হোসেনের কাছ থেকে।
ওই লিখিত কাগজে উল্লেখ করা হয়, বাজার থেকে উপার্জিত অর্থ হতে জায়গার মালিক খাঁন মোঃ ইকবাল হোসেনকে মাসিক ভাড়া বাবদ ২ লক্ষ টাকা প্রদানের পর অবশিষ্ট টাকা জামাল হোসেনকে দেয়া হবে। কিন্তু পরবর্তীতে অদ্যবধি জামাল হোসেনকে এক টাকাও প্রদান করা হয়নি। বরং পাওনা দাবি করতে গেলে খাঁন মোঃ ইকবাল হোসেন ও মোঃ শাহজাহান শিকদারসহ তাদের সহযোগীরা তাকে গুম, খুন ও হত্যার হুমকি প্রদান করে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী। অন্যদিকে ভাড়াটিয়া মোঃ আমির হোসেনও নিজের অগ্রিম জামানতের টাকা ফেরত না পাওয়ায় বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন।

এমতাবস্থায় জামাল হোসেন কাউন্সিলর অফিস ও সংশ্লিষ্ট থানায় অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার না পাওয়ায় শেষ পর্যন্ত ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন।

মামলায় তিনি তার ব্যাপক আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির (যা আনুমানিক ১ কোটি ২১লক্ষ ৩০হাজার ১শত ৫০টাকা) ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

ভুক্তভোগী মোঃ জামাল হোসেন বলেন, “আমি প্রবাসে উপার্জিত টাকা, ঋণ ও পরিবারের সম্পদ বিক্রি করে বাজারটি গড়ে তুলেছি। এখন প্রতারণা করে সব কেড়ে নেওয়া হয়েছে। আমি শুধু আমার ন্যায্য পাওনা ও জীবনের নিরাপত্তা চাই। আমার প্রায় আনুমানিক ১ কোটি ২১লক্ষ ৩০হাজার ১শত ৫০টাকার ক্ষতি হয়েছে।”

এ বিষয়ে অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে অভিযুক্ত খাঁন মোঃ ইকবাল হোসেন ও মোঃ শাহজাহান শিকদারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তবে তাদের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করেও যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *