অনলাইন ডেস্ক: বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে বহুমুখী সহযোগিতা জোরদারে পুত্রজায়ায় অনুষ্ঠিত শীর্ষ বৈঠকে আটটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি সই হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে প্রতিরক্ষা, জ্বালানি, কৌশলগত গবেষণা, প্রযুক্তি, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতাসহ পাঁচটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) এবং উচ্চশিক্ষা, কূটনৈতিক প্রশিক্ষণ ও হালাল ইকোসিস্টেমে সহযোগিতার জন্য তিনটি ‘নোট অব এক্সচেঞ্জ’।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সকালে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের উপস্থিতিতে এসব চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সফরের শুরুতে অধ্যাপক ইউনূস পুত্রজায়ায় পৌঁছালে লাল গালিচা সংবর্ধনা ও গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। আনুষ্ঠানিক বৈঠকের আগে তিনি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিদর্শন বইয়ে সই করেন এবং দেশটির কূটনীতিকদের সঙ্গে পরিচিত হন।
চুক্তিগুলোর মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতায় সই করেন মালয়েশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোহাম্মদ খালিদ বিন নরদিন ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। জ্বালানি সহযোগিতা বিষয়ক চুক্তিতে মালয়েশিয়ার ভারপ্রাপ্ত অর্থমন্ত্রী আমির হামজাহ বিন আজিজান ও বাংলাদেশের জ্বালানি উপদেষ্টা এম ফওজুল কবির খান সই করেন। এছাড়া দুই দেশের কৌশলগত ও আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান, প্রযুক্তি সেবা খাত এবং ব্যবসা-বাণিজ্য সংগঠনের মধ্যেও একাধিক সমঝোতা হয়।
নোট অব এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে উচ্চশিক্ষা, কূটনৈতিক প্রশিক্ষণ এবং হালাল ইকোসিস্টেমে সহযোগিতার অঙ্গীকার করা হয়। এসব নথিতে সই করেন মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী দাতো সেরি উতামা হাজী হাসান, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের উপমন্ত্রী জুলকিফলি বিন হাসান, বিডা চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুনসহ দুই দেশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে জনশক্তি রপ্তানি, পর্যটন, বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সম্প্রসারণ নিয়েও আলোচনা হয়। বিকেলে অধ্যাপক ইউনূস ব্যবসায় ফোরামে অংশ নেবেন এবং পরে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। বুধবার তিনি ইউনিভার্সিটি কেবাংসান মালয়েশিয়া (ইউকেএম) থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট গ্রহণ এবং শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে স্মারক বক্তৃতা প্রদান করবেন।
২০২৪ সালের ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম প্রথম বাংলাদেশ সফর করেন। তার আমন্ত্রণেই এই সফরে পুত্রজায়া ও কুয়ালালামপুরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে দ্বিপক্ষীয় এই উচ্চপর্যায়ের কর্মসূচি, যা দুই দেশের সম্পর্ককে নতুন মাত্রা দেবে বলে কূটনৈতিক সূত্রগুলো মনে করছে।