অনলাইন ডেস্ক: ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে গঙ্গার পানিস্তর বিপৎসীমা অতিক্রম করায় বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে সীমান্তবর্তী এলাকায়। পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে ফারাক্কা ব্যারাজ থেকে অতিরিক্ত পানি ছাড়তে বাধ্য হবে কর্তৃপক্ষ, যার প্রভাব পড়তে পারে বাংলাদেশেও। এ বিষয়ে ইতোমধ্যে বাংলাদেশের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়কে আনুষ্ঠানিকভাবে অবহিত করা হয়েছে।
গত কয়েকদিন ধরে ঝাড়খণ্ড ও বিহারে টানা ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে গঙ্গায় পানির প্রবাহ হঠাৎ বেড়ে গেছে। মুর্শিদাবাদের ফারাক্কা ব্যারাজ এলাকায় গঙ্গার বিপৎসীমা নির্ধারিত রয়েছে ২২ দশমিক ২৫ মিটার। অথচ সোমবার (১১ আগস্ট) দুপুরে আপস্ট্রিমে পানিস্তর দাঁড়িয়েছে ২৭ দশমিক ১০ মিটারে এবং ডাউনস্ট্রিমে ২৪ দশমিক ০১ মিটারে। পানির এ অতিরিক্ত চাপের কারণে ব্যারাজসংলগ্ন নিম্নাঞ্চলে হু হু করে পানি ঢুকে পড়ছে।
ফারাক্কা ব্যারাজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ ও বিহারের পাশাপাশি গঙ্গার মধ্যপ্রবাহে ভারী বর্ষণের প্রভাবে ঝাড়খণ্ড থেকে বিপুল পরিমাণ পানি প্রবাহিত হচ্ছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই স্তর আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে ব্যারাজ থেকে নিয়ন্ত্রিতভাবে পানি ছাড়া শুরু হয়েছে। কিন্তু অতিরিক্ত পানিপ্রবাহ অব্যাহত থাকলে আরও বেশি পানি ছেড়ে দিতে হবে, যা বাংলাদেশেও প্লাবনের কারণ হতে পারে।
মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ, জলঙ্গি, সুতি, ফারাক্কাসহ বিস্তীর্ণ এলাকায় বন্যার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। সামশেরগঞ্জে রোববার (১০ আগস্ট) রাত থেকেই গঙ্গার পানি ভয়াল রূপ ধারণ করেছে; বিশেষ করে উত্তর চাচন্ডসহ নিচু এলাকাগুলো দ্রুত জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। গঙ্গার পানিস্তর বৃদ্ধির ফলে এর শাখা নদীগুলোতেও পানি বেড়েছে, যা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশের পদ্মা অববাহিকায় প্রবেশ করছে।
পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে ভারতীয় প্রশাসন। জঙ্গিপুর মহকুমা শাসক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সৌম্যজিৎ বড়ুয়া, ফারাক্কা ব্লকের উন্নয়ন কর্মকর্তা জুনায়েদ আহমেদ ও ফারাক্কা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নীলোৎপল মিশ্র সোমবার সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জনগণকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।