নিষ্ঠাবান এক পুলিশ কনস্টেবলের রাজকীয় বিদায়

নিউজ ডেস্ক: দীর্ঘ ৪০ বছরের কর্মজীবন শেষে সহকর্মীদের আয়োজনে ফুলসজ্জিত গাড়িতে বাড়ি ফিরলেন কনস্টেবল লিয়াকত আলী।

বৃহস্পতিবার (০১ জুন) দুপুরে তাকে বিদায় সংবর্ধনা দেয়া হয় নোয়াখালীর কবিরহাট থানায়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন নোয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোর্তাহীন বিল্লাহ। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হেলাল উদ্দিনসহ অনেকে।


বিদায়ী কনস্টেবল লিয়াকত আলীকে ভালো কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ সহকর্মীরা ফুলের মালা, ক্রেস্ট ও নানা ধরনের উপহার দেন। অনুষ্ঠানে তার দুই ছেলে ছাড়াও থানার অন্যান্য পুলিশ সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
কনস্টেবল লিয়াকত আলীর বাড়ি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের লাউতলী গ্রামে। তার বাবার নাম নুর মোহাম্মদ। বুধবার (৩১ মে) ছিল তার চাকরিজীবনের শেষ কর্মদিবস। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি চার ছেলে ও এক মেয়ের বাবা।

লিয়াকত আলী বলেন, ‘আমি ১৯৮৩ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ পুলিশে যোগদান করি। প্রায় ৪০ বছর চাকরি জীবনে আল্লাহকে ভয় করে দেশের সেবায় নিয়োজিত ছিলাম। আমার চলাফেরায় বা কথাবার্তায় কেউ কষ্ট পেয়ে থাকলে আমাকে ক্ষমা করে দেবেন।’
থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হেলাল উদ্দিন জানান, কনস্টেবল লিয়াকত আলী কাজের প্রতি এতটাই যত্নবান ছিলেন যে, তাকে কখনো সময়ক্ষেপণ করতে দেখিনি। সহকর্মী ও সেবাপ্রার্থী জনগণের প্রতি তার যে দায়িত্ববোধ তা তিনি অক্ষরে অক্ষরে পালন করতেন।

ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এ থানায় ৮ মাসের বেশি সময় কনস্টেবল লিয়াকত আলী আমার সঙ্গে কাজ করেছেন। যখন যে কাজ দিয়েছি তা নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করেছেন। কখনো তাকে দায়িত্ব অবহেলা করতে দেখিনি। রাতের পর রাত নির্ঘুম থেকে জনগণের সেবায় কাজ করেছেন। লিয়াকত আলীদের আত্মত্যাগে পুলিশের সুনাম অনেক বেড়েছে।’

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোর্তাহীন বিল্লাহ জানান, ‘লিয়াকত আলীর বিদায় আমাদের জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। তিনি আমাদের পুলিশ বিভাগের গর্ব। জীবনের ৪০ বছর এ বাহিনীতে থেকে যে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন, নিশ্চয় বাকি জীবনেও তিনি সমাজের জন্য কাজ করে যাবেন।

পরে তাকে ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে ফুলসজ্জিত গাড়িতে তুলে দেন সহকর্মীরা। এ সময় লিয়াকত আলী আবেগাপ্লুত হয়ে সবার সঙ্গে করমর্দন করেন এবং কর্মস্থল থেকে শেষ বিদায় নিয়ে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *