নরসিংদীতে ফলের আড়তে হামলা

নিজস্ব প্রতিনিধি: নরসিংদী সদর উপজেলার মেহেরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান আজাহার অমিত প্রান্তসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার (২০ জুন) মামলা হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী কাজী নাহিদুল ইসলাম।

গত বুধবার (১৪ জুন) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে একটি ফলের আড়তে হামলা চালিয়ে নিরাপত্তাবেষ্টনী ভেঙে পাঁচজনকে কুপিয়ে আহত করার ঘটনায় মামলাটি করা হয়।

বাদীপক্ষের আইনজীবী কাজী নাহিদুল ইসলাম জানান, মেহেরপাড়া ইউনিয়নের পাঁচদোনা এলাকার ‘আল্লাহর দান’ নামে একটি ফলের আড়তে স্থানীয় চেয়ারম্যানের নির্দেশে একদল কর্মী-সমর্থক হামলা চালিয়ে নিরাপত্তাবেষ্টনী ভেঙে ফেলেন। এ সময় তাদের বাধা দেওয়ায় আড়তটির পাঁচজনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করা হয়। আহত ব্যক্তিরা চিকিৎসা শেষে বিচারের আশায় মাধবদী থানায় মামলা করতে গেলেও চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে পুলিশ মামলা নেয়নি। তাই বাধ্য হয়ে আদালতে মামলা করা হয়।

মামলার আসামিরা হলেন- মেহেরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান আজাহার অমিত প্রান্ত (২৭) এবং তার কর্মী মেহেদী হাসান (৩০), আশরাফ মিয়া (২৮), রবিন মিয়া (৩০), সাজন মিয়া (২৫), মো. হুমায়ুন (২৮), রাজন মিয়া (৩০), সাদ্দাম হোসেন (২৫), ছাদু মিয়া (২২), ফয়সাল মিয়া (২৮), হুমায়ুন মিয়া (৩০) ও মো. মামুন (২৬)। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ২-৩ জনকে আসামি করা হয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার(১৯ জুন) বিকেলে নরসিংদীর অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মেহের নিগারের আদালত ওই অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করেছেন। প্রাথমিক শুনানি শেষে আদালত আসামীদের গ্রেফতারের জন্য মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।

এজাহারে বলা হয়েছে, পাঁচদোনা এলাকায় রতন ভূঁইয়া ও রিপন ভূঁইয়া নামের দুই ব্যক্তির কাছ থেকে ভাড়া নিয়ে ‘আল্লাহর দান’ ফলের আড়ত স্থাপন করা হয়েছিল। ওই দুই ব্যক্তির সঙ্গে আসামিদের জমিসংক্রান্ত বিরোধ রয়েছে। এর জের ধরে গত বুধবার (১৪ জুন) চেয়ারম্যানের নির্দেশে আসামিরা চাপাতি, রামদা, লোহার হ্যামার, লোহার রড ও লাঠিসোটা নিয়ে আড়তে হামলা চালায়। তারা নিরাপত্তাবেষ্টনী ভেঙে ফেলার সময় বাধা দিলে আড়তের কর্মী নোবেল মাহমুদ (২৬), হৃদয় মিয়া (২২), আনিসুর রহমান (৩৫), ইয়াছিন মিয়া (২৫) ও ফেরদৌস মিয়াকে (২০) পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করে চলে যায়। স্থানীয় লোকজন ও পুলিশের সহায়তায় তাদের পাঁচজনকেই ১০০ শয্যা বিশিষ্ট নরসিংদী জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। আহতরা সুস্থ হওয়ার পর মাধবদী থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেয়।

মামলার বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে মেহেরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আজাহার অমিত প্রান্তের ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেয়া হলেও তিনি কোনো সাড়া দেননি। তবে এর আগে তিনি জানিয়েছিলেন, স্থানীয় জনগণের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেয়ায় ওই ফলের আড়তের দেয়াল ভেঙে দেয়া হয়েছে। এ সময় বাধা দিতে এসে কয়েকজন আহত হয়েছেন।
এ বিষয়ে মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুজ্জামান বলেন, এই ঘটনায় আদালতে মামলা হওয়ার বিষয়টি এইমাত্র শুনলাম। এই সংক্রান্ত আদালতের কোনো নির্দেশও এখন পর্যন্ত আমাদের হাতে এসে পৌঁছায়নি। আদালতের নির্দেশনা হাতে পাওয়ার পর যত দ্রুত সম্ভব তা বাস্তবায়ন করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *