নিউজ ডেস্ক: দিনাজপুরের খানসামায় ইছামতী নদীর ওপর সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি চার বছরেও। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সেতুর পাইলিং করেই উধাও। সময়মতো সেতুর কাজ শেষ না হওয়ায় নদীর দুপাড়ের অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ দুর্ভোগে। বাধ্য হয়ে সেতুর স্থানেই কাঠের সাঁকো নির্মাণ করেছে ইউনিয়ন পরিষদ।
কাঠের সাঁকোই এখন চার গ্রামের মানুষের পারাপারের একমাত্র ভরসা। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু না করলে চূড়ান্ত ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী।
দিনাজপুরের খানসামায় জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে ২০১৮ সালে তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বর্তমান সংসদ সদস্য আবুল হাসান মাহমুদ আলী উপজেলার গোয়ালডিহি গ্রামে ইছামতী নদীর বটতলী সাঁকোরপাড়ে সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
২০২০ সালের ২৭ জানুয়ারি নির্মাণ কাজও শুরু করেন ঠিকাদার। শেষ হবার কথা ২০২১ সালের জুন মাসে। কিন্তু সেতুটির পাইলিং করেই লাপাত্তা ঠিকাদার। সঙ্গে নিয়ে গেছেন নির্মাণ সামগ্রীও। বাধ্য হয়ে কাঠের সাঁকো দিয়ে চলাচল করছেন গোয়ালডিহি, দুবলিয়া, হাসিমপুর ও ভাবকী চার গ্রামের মানুষ। বিশেষ করে বর্ষাকালে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় অসুস্থ রোগী, কৃষক-শ্রমিক, শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণিপেশার অর্ধ লক্ষাধিক মানুষকে।
দুবুলিয়া এলাকার বাসিন্দা নবিউল ইসলাম বলেন, সেতুর পাইলিং করার পর ঠিকাদারের লোকজনের আর দেখা নাই; কবে যে শেষ হবে কাজ!
ইউপি সদস্য সফরি উদ্দিন বলেন, কাজ শুরু করেই ৩০ শতাংশ বিল তুলে নিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ফলে কাজ থমকে গিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন প্রত্যন্ত এ অঞ্চলের মানুষ।
বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে গোয়ালডিহি ইউপি চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন লিটন বলেন, এ অঞ্চলের মানুষের চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সেতুর কাজ শুরু হওয়ায় আশার আলো দেখা গিয়েছিল। কিন্তু কাজ বন্ধ হওয়ায় সেটি হতাশায় পরিণত হয়েছে।
মানুষের চরম ভোগান্তি লাঘবে দ্রুত সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছেন আকবর আলী শাহ দাখিল মাদ্রাসা ও এতিমখানার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী শাহিদুল ইসলাম বলেন, কাজ শুরু করতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দেয়া হয়েছে। কাজ না করলে তার বিরুদ্ধে চূড়ান্ত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, দিনাজপুরের খানসামায় ইছামতি নদীর ওপর দুই হাজার মিটার চেইনেজে ৬০ মিটার দীর্ঘ আরসিসি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণকাজের জন্য এলজিইডির অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প-২-এর অধীনে তিন কোটি ৩৬ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়।
এ বিষয়ে কথা বলার চেষ্টা করেও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী এহতেশামুল হককে মুঠোফোনে পাওয়া যায়নি।