অনলাইন ডেস্ক: বন্দরকেন্দ্রিক আন্দোলন দমাতে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) চট্টগ্রাম মহানগরের যুগ্ম সমন্বয়কারী নিজাম উদ্দিনকে দলের সব ধরনের সাংগঠনিক কার্যক্রম থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন সিফাত স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে নিজাম উদ্দিনের বিরুদ্ধে আর্থিক কেলেঙ্কারি ও গুরুতর দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। এসব কারণে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হওয়ায় তাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়, যা তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হয়েছে। একই সঙ্গে কেন স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না— তা লিখিত আকারে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এনসিপির কেন্দ্রীয় শৃঙ্খলা কমিটির প্রধান অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল-আমিনের কাছে জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ ঘটনার সূত্রপাত রবিবার (১০ আগস্ট) সন্ধ্যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া দেড় মিনিটের একটি ভিডিওকে কেন্দ্র করে। ভিডিওটিতে নিজাম উদ্দিনকে আফতাব হোসেন রিফাত নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে মেসেঞ্জারে কথা বলতে শোনা যায়। কথোপকথনে রিফাত জানায়, আন্দোলন দমাতে পাঁচ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে। জবাবে নিজাম উদ্দিন আরও পাঁচ লাখ টাকা নেওয়ার পরামর্শ দেন এবং সেই অর্থের একটি অংশ সংশ্লিষ্ট কয়েকজনকে দেওয়ার ইঙ্গিত দেন। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, রিফাত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রাম বন্দরকেন্দ্রিক সমন্বয়ক এবং ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপলোড করেন সংগঠনের চট্টগ্রাম নগর শাখার সাবেক যুগ্ম সদস্যসচিব রাহাদুল ইসলাম।
এর আগে সোমবার (১১ আগস্ট) এনসিপি চট্টগ্রাম মহানগর কমিটি তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়। এতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে লিখিত জবাব দিতে বলা হয়। তবে নিজাম উদ্দিন দাবি করেছেন, ভিডিওটি পরিকল্পিতভাবে ছড়িয়ে তার রাজনৈতিক অবস্থান দুর্বল করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তার ভাষায়, “এটি পুরনো ভিডিও, মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। প্রয়োজনে গোয়েন্দা সংস্থা তদন্ত করুক।”
নিজাম উদ্দিনের বিরুদ্ধে এর আগেও চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছিল। গত ৫ জুলাই এক নারী অভিযোগ করেন, দুই কোটি টাকা চাঁদা না দেওয়ায় তার স্বামীকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়। সে সময় নিজাম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রাম নগর শাখার সদস্যসচিব ছিলেন এবং অভিযোগ ওঠার পর তার পদ স্থগিত করা হয়, পরে ফেরত দেওয়া হয়।
এনসিপি চট্টগ্রাম মহানগরের প্রধান সমন্বয়কারী মীর আরশাদুল হক বলেন, অভিযোগের বিষয়ে নিয়ম অনুযায়ী তদন্ত ও ব্যাখ্যা চাওয়া হবে। প্রমাণ পাওয়া গেলে দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তথ্যসূত্র: এফএনএস