গাজায় একদিনে ৬২ ফিলিস্তিনির প্রাণ ঝরলো

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইসলায়েলি আগ্রাসণ প্রতিনিয়ত বাড়ছেই। এতে নিহত হচ্ছে শত শত মানুষ। পাশাপাশি ইসরায়েলি বিভিন্ন হামলায় আহত হয়ে হাসপাতালে জড়ো হচ্ছেন হাজার হাজার গাজাবাসি।

সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় জাতিসংঘ পরিচালিত স্কুল-আশ্রয়কেন্দ্র ছাড়াও গাজার বিভিন্ন অংশে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল বাহিনী। এসব হামলায় গাজাজুড়ে প্রাণ হারিয়েছেন আরও ৬২ ফিলিস্তিনি। এর মধ্যে শুধু গাজা সিটিতেই ঝরে পড়েছে ৪৯ প্রাণ।

সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা রোববার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, শনিবার দিনভর ইসরায়েলি হামলার তীব্রতা এতটাই ভয়াবহ ছিল যে, কেবল গাজা সিটিতেই অন্তত ছয় হাজার মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন এদিন।

গাজার সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল বলেন, দখলদার বাহিনীর অব্যাহত অবরোধ ও বোমাবর্ষণের মধ্যে অত্যন্ত কঠিন পরিস্থিতিতে বসবাস করছেন গাজা শহরের বাসিন্দারা।

গাজা সিটি থেকে আল জাজিরার হানি মাহমুদ বলেন, প্রতি ১০ থেকে ১৫ মিনিটের ব্যবধানে আবাসিক ভবন এবং জনসাধারণের স্থাপনাগুলোতে বোমা ফেলা হচ্ছে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান থেকে। মানুষকে নিরাপদে সরে যাওয়ার জন্য পর্যাপ্ত সময়ও দেওয়া হচ্ছে না।

শনিবার গাজা শহরের সবচেয়ে বড় হামলাগুলো চালানো হয় জাতিসংঘ পরিচালিত তিনটি স্কুলে, যেখানে শরণার্থীরা আশ্রয় নিয়েছিল। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় অপুষ্টিজনিত কারণে আরও সাতজন মারা গেছেন, যাদের মধ্যে একাধিক শিশুও রয়েছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরুর পর থেকে গাজাজুড়ে অনাহার ও অপুষ্টিতে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪২০, যাদের মধ্যে ১৪৫ জনই শিশু।

এছাড়া ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত হামলায় এ পর্যন্ত গাজায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৬৪ হাজার ফিলিস্তিনি। সেইসঙ্গে আহত হয়েছেন আরও ১ লাখ ৬৩ হাজার মানুষ।

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ২৩ মাসেরও বেশি সময় ধরে অমানবিক আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল; হামাস উৎখাত ও জিম্মি মুক্তির নাম দিয়ে প্রতিদিনই চলছে ভয়াবহ হামলা ও নিপীড়ন। দখলদার বাহিনীর নারকীয় এ হত্যাযজ্ঞ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত মৃত্যুহীন একটি দিন পার করতে পারেনি ভূখণ্ডটির বাসিন্দারা।

সম্প্রতি গাজা সিটি দখলের পরিকল্পনা নিয়ে প্রকাশ্য ঘোষণা দেওয়ার পর তাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থন পেয়ে যেন আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। প্রতিদিনই বাড়ছে হামলার তীব্রতা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *