ইসলামের দৃষ্টিতে প্রতিবাদ করাও ইবাদত

ধর্ম ডেস্ক: মহান আল্লাহ মানুষ সৃষ্টি করেছেন। বানিয়েছেন সৃষ্টির সেরা। দিয়েছেন সর্বোত্তম অবয়ব। বিবেক-বুদ্ধি দিয়েছেন। তারা সৎকাজে উৎসাহিত করবে। আর অসৎকাজে বাধা দেবে। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, তোমরা শ্রেষ্ঠ জাতি, মানুষের কল্যাণেই তোমাদের সৃষ্টি করা হয়েছে। তোমরা সৎ কাজের আদেশ দেবে এবং অন্যায় কাজে বাধা প্রদান করবে। (সুরা আলে ইমরান, আয়াত: ১১০)

মুমিন বান্দা মানবকল্যাণে নিবেদিত থাকবে। সবার সুখ-দুঃখে পাশে থাকবে। কোনো অন্যায় হতে দেখলে সবার আগে সামর্থ্য অনুযায়ী সেটির প্রতিবাদ করবে। আবু সায়িদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমাদের মধ্যে যে কেউ কোনো অন্যায় হতে দেখলে যেন হাত দিয়ে বদলে দিতে চেষ্টা করে। যদি তা না পারে, তবে কথা দিয়ে; তাও না পারলে অন্তর দিয়ে (ঘৃণা করবে)। এটি ঈমানের দুর্বলতম স্তর। (মুসলিম, হাদিস: ৭৪)

যেখানেই অন্যায় দেখবে, অবশ্যই প্রতিবাদ করবে। মিথ্যা প্রকাশ পেলে, সত্য তুলে ধরবে। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেছেন, আর তোমরা সত্যকে মিথ্যার সঙ্গে মিশ্রিত কোরো না এবং জেনে-বুঝে সত্য গোপন কোরো না। (সুরা বাকারা, আয়াত: ৪২)

অন্যায় কাজের প্রতিবাদ করা ইবাদত। এটি বড় সওয়াবের কাজ। আবু উমামা বাহেলি (রা.) থেকে বর্ণিত, (বিদায় হজে) প্রথম জামারায় পাথর নিক্ষেপের সময় এক ব্যক্তি রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রসুল! কোন জিহাদ সর্বোত্তম? রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে এড়িয়ে গেলেন। অতঃপর দ্বিতীয় জামারায় গিয়েও তিনি তাঁর উদ্দেশে একই প্রশ্ন করলেন। রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও একইভাবে এড়িয়ে গেলেন। অবশেষে তৃতীয় জামারায় বা জামারা ‘আকাবায় গিয়ে যখন রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাথর নিক্ষেপ করলেন এবং উটের রেকাবীতে পা রাখলেন, তিনি জানতে চাইলেন, ‘প্রশ্নকারী ওই ব্যক্তি কোথায়?’ ওই ব্যক্তি বললেন, এই আমি এখানে হে আল্লাহর রসুল। তিনি বললেন, সর্বোত্তম জিহাদ ওই ব্যক্তি করে যে অত্যাচারী শাসকের সামনে সত্য কথা বলে। (আহমদ, হাদিস: ১৮৮৩০; তিরমিজি, হাদিস: ২১৭৪)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *