• ঢাকা, বাংলাদেশ

হাত পায়ে ঝিঁঝি ধরার কারণ কী? 

 obak 
22nd Apr 2022 3:14 am  |  অনলাইন সংস্করণ

লাইফস্টাইল ডেস্ক :র্দীঘ সময় ধরে একই ভঙ্গিতে বসে থাকলে পা ভারী হয়ে আসে। থাকে না কোনো শক্তি। তখন পা সরাতে গেলেই শুরু হয় ঝিঁঝি। তবে পায়ের মতো হাতের ক্ষেত্রেও এমনটা হয়। র্দীঘ সময় ধরে একই ভঙ্গিতে হাত কোনো জায়গায় রেখে দিলে, বিশেষ করে ঘুমের সময় আমাদের শরীরের কোনো অঙ্গের নিচে হাত বেকায়দায় চাপা পড়লে হাতে ঝিঁঝি ধরে থাকে। সেক্ষেত্রেও হাতে শক্তি পাওয়া যায় না। হাত সরাতে গেলেই শুরু হয় ঝিঁঝি।

হাতে বা পায়ে ঝিঁঝি ধরার সঙ্গে সবাই পরিচিত। অনেক সময় পা বা হাতের ওপর দীর্ঘক্ষণ চাপ পড়লে বা একই ভঙ্গিমায় বসে বা শুয়ে থাকলে সাময়িক যে অসাড় অনুভূতি তৈরি হয় সেটিকেই সাধারণত ঝিঁঝি ধরা বলা হয়ে থাকে। বিজ্ঞানের ভাষায় একে টেম্পোরারি প্যারেসথেশিয়া বলে, ইংরেজিতে এটিকে পিনস অ্যান্ড নিডলসও বলা হয়ে থাকে।

সাধারণত পায়েই ঝিঁঝি বেশি ধরে। অনেক সময় ধরে এক জায়গায় বসে থাকলে হঠাৎ দেখা যায় পা আর নাড়ানো যাচ্ছে না। পা ভারী ভারী লাগে। পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়াতে গিয়ে অনুভব করলেন যে ঝিঁঝি ধরেছে। মূলত পায়ের পেশিগুলো যে স্নায়ু নিয়ন্ত্রণ করে তার ওপর চাপ পড়লেই পায়ে এমনটা অনুভব হয়। তখন পায়ে সাড়া পাওয়া যায় না। একই ভঙ্গিতে অনেক সময় ধরে বসে থাকলে পায়ের কয়েকটি অংশে রক্তে জমাট বেঁধে ঝিঁঝি অনুভূত হয়।

এই ঝিঁঝি ধরার অনুভূতিটিকে মোটামুটিভাবে তিন ধাপে বিভক্ত করা যায়:
১. প্রথম ধাপে তিন থেকে চার মিনিটের জন্য কিছুটা অস্বস্তিকর অনুভূতি হয়, এ সময় মনে হয় যেন ত্বকের ভিতর অসংখ্য পিঁপড়ে হেঁটে বেড়াচ্ছে। এ বিষয়টিকে কমপ্রেশন টিঙ্গলিং বলা হয়।
২. দ্বিতীয় ধাপটি সাধারণত শুরু হয় পাঁচ-দশ মিনিট পর। এ ধাপে হাতে বা পায়ের সংশ্লিষ্ট অংশটি অসাড় হয়ে আসে।
৩. তৃতীয় ও শেষ ধাপটি শুরু হয় চাপ অপসারণ করার পর। এ অংশটিকেই ইংরেজিতে পিনস অ্যান্ড নিডলস বলা হয়। এই সময়ে মনে হয় যেন অসংখ্য সুঁচ দিয়ে একসঙ্গে ঐ অংশে খোঁচা দেওয়া হচ্ছে। তবে সাধারণত কিছুক্ষণের মধ্যেই অসাড়তা এবং খোঁচা লাগার মতো অস্বস্তিকর অনূভুতি চলে গিয়ে স্বাভাবিক অনুভূতি ফিরে আসে।
কিন্তু কেনো হয় এমনটা?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানবদেহে অসংখ্য স্নায়ু রয়েছে, এ স্নায়ুগুলো মস্তিষ্ক ও দেহের অন্যান্য অংশের মধ্যে তথ্য আদান-প্রদান করে। বসা বা শোয়ার সময় এ স্নায়ুর কোনো একটিতে চাপ পড়তে পারে। স্নায়ুতে চাপ পড়ার ফলে শরীরের ওই অংশ থেকে তথ্য মস্তিষ্কে ঠিকভাবে পৌঁছাতে পারে না। পাশাপাশি দেহের ওই অংশে রক্ত চলাচলকারী শিরার উপরও চাপ পড়ে। ফলে শরীরের ওই অংশে রক্ত চলাচল ব্যাহত হয়। ফলে ঝিঁঝি ধরতে পারে। 

এ পরিস্থিতি থেকে চাপ অপসারিত হলে, একসঙ্গে প্রচুর পরিমাণ রক্ত অঙ্গ প্রত্যঙ্গে প্রবাহিত হয়, পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণ তথ্য মস্তিষ্কে প্রবাহিত হতে শুরু করে। ফলে সুঁচ ফোটার অনুভূতি তৈরি হয়।

কখন পরামর্শ নিতে হবে চিকিৎসকের
সাধারণত ভঙ্গি বদলের অল্প কিছু সময়ের মধ্যেই এই সমস্যা দূর হয়ে যায়। কিন্তু এ সমস্যা যদি ক্রমাগত হতেই থাকে তবে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। কোনো অঙ্গ যদি বার বার এ সমস্যায় আক্রান্ত হয় বা দীর্ঘ সময় পরেও ঝিঁঝি লাগা বন্ধ না হয়, তবে অবিলম্বে যোগাযোগ করতে হবে চিকিৎসকের সঙ্গে। 

মেরুদণ্ড ও মস্তিষ্কের সমস্যা থেকে দীর্ঘমেয়াদি ভিত্তিতে এ সমস্যা দেখা দিতে পারে। প্যারেসথেশিয়া দেখা দিতে পারে ডায়াবেটিস থেকেও। তাই দীর্ঘ সময় ধরে এই সমস্যা দেখা দিলে বসে থাকা যাবে না।

সূত্র: আনন্দবাজার

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

আর্কাইভ

September 2023
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930