• ঢাকা, বাংলাদেশ

লাগাম টেনে ধর : হামিদুল আলম সখা 

 obak 
26th May 2023 12:18 pm  |  অনলাইন সংস্করণ
২০১৯ সালে সারা বিশ্বে মানব জাতির উপর জেকে বসেছিল কোভিড-১৯।এই ভাইরাস রোগ আক্রান্ত হয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ মারা গেলো।প্রায় দুইটি বছর সারা বিশ্ব ঘর বন্দি হয়ে গিয়েছিল।না ছিল উৎপাদন,না ছিল ব্যবসা।বিশ্বে বাণিজ্য ভারসাম্য প্রকট আকার ধারণ করেছিল।
একজন মানুষ আরেকজন এর সাথে স্বাচ্ছন্দে কথা বলতে পারতো না।কি এক দূর্বিসহ জীবন। অসুস্থ মায়ের পাশে ছেলে মেয়েরা বসতে পারতো না।এমনকি মৃত্যবরণ করলে কবর পর্যন্ত দিতে পারতো না।
সারা বিশ্বে বৈশ্বিক অবস্থার বিপর্যয় আগে কেউ এমনটি দেখেনি। অনেকেই বলেছেন , যত টাকা লাগুক আমাকে বাঁচাও। কিন্তু হয়নি।
দুই।
পণ্য ও সেবার দাম বেড়ে যাওয়াকে বুঝি মুদ্রাস্ফীতি।যেখানে অতিরিক্ত মুদ্রার সরবরাহ হয়।সারা বিশ্বে তীব্র জ্বালানি সংকট,খাদ্য সরবরাহ কমে যাওয়া, উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধির ফলেই দেখা দেয় মুদ্রাস্ফীতি।সহজ ভাষায় একটি দেশের বাজারে পণ্যের মজুদ এবং মুদ্রার পরিমাণের মধ্যে ভারসাম্য থাকতে হয়।যদি পণ্যের তুলনায় মুদ্রার সরবরাহ বেড়ে যায় অর্থাৎ দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক অতিরিক্ত মাত্রায় টাকা ছাপায় তখনই মুদ্রাস্ফীতি ঘটে।
বর্তমানে বাংলাদেশের মুদ্রাস্ফীতি ৮.৪৫ শতাংশ।
মুদ্রাস্ফীতি না কমলে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে না। সাধারণ পণ্যের মূল্য বেড়ে কোন কোন ক্ষেত্রে দ্বিগুণ হয়ে গেছে।  যা সাধারণ মানুষের ক্রয় সীমার বাইরে। পিঁয়াজের দাম কেজি প্রতি ৪০ টাকা থেকে বেড়ে ৮০ টাকা হয়েছে।আদার দাম বেড়ে হয়েছে ৪৫০টাকা কেজি।মসলার দাম তিন গুণ চার গুণ বেড়েছে।
এইসব পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় মুদ্রাস্ফীতি ঘটেছে বলে অনুমেয় হয়।বিশ্বের সব দেশের মুদ্রাস্ফীতি বেড়েছে। বিশেষ করে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ অস্থির হয়েছে ।এই অস্থিরতার কারণে খোদ আমেরিকা থেকে এশিয়ার দেশগুলোতে মুদ্রাস্ফীতি বেড়েছে।পণ্যের ভারসাম্য একদিকে যেমন রক্ষা হচ্ছে না অন্যদিকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা ডলারের সংকট।
বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ যদিও উঠানামা করছে তারপরও বলা যায় রিজার্ভ কখনো শূণ্যের কোঠায় ঠেকবে না।কারণ যে হারে রিজার্ভ খরচ হচ্ছে সেই হারে পুনঃ ভরণ হচ্ছে।
তিন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ পুনঃ ভরণ হয় মূলতঃ মানবসম্পদের মাধ্যমে যে রেমিট্যান্স দেশে আসে।এছাড়া পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে প্রতিমাসেই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ বাড়ছে।
অতি উৎসাহী কিছু সংখ্যক বুদ্ধিজীবী শ্রীলংকার অর্থনৈতিক মন্দা দেখে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলেছিল বাংলাদেশও শ্রীলংকার মতো হবে।সেইসময় জাতীয় প্রেসক্লাবের একটি অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চেয়ার ড.আতিউর রহমান বলেছিলেন , “বাংলাদেশ কখনোই শ্রীলংকার মতো হবে না। শ্রীলংকার অর্থনৈতিক রিসোর্স বাংলাদেশের মতো নয়।”
মজুতদারী, কালোবাজারি যারা করে তারা অসাধু ব্যবসায়ী।বাজার অস্থিতিশীল করে তারা।সরকারকেই এসব মজুতদারী, কালোবাজারি রুখতে হবে। রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে বিরোধীদলীয় নেতারা অসাধু ব্যবসায়ীদের ব্যবহার করে।যদিও প্রত্যক্ষ প্রমাণ পাওয়া দুষ্কর।
বর্তমানে বাজারে ব্যবস্থা পরিপূর্ণভাবে ভেঙে পড়েছে।এই বাজার ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে সরকারকেই।
কারণ খুব শিঘ্রই জাতীয় সংসদ নির্বাচন আসছে। বাজার যত অস্থিতিশীল হবে সরকারের অবস্থা তত খারাপ  দেখা দিবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও খাদ্যমন্ত্রনালয়কেই ঐ কালোবাজারি ও মজুতদারীদের লাগাম টেনে ধরতে হবে।
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

আর্কাইভ

December 2023
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031