• ঢাকা, বাংলাদেশ

রহস্যজনক যন্ত্র ব্যবহার করে আলোচনায় জোকোভিচ 

 obak 
03rd Jun 2023 2:37 am  |  অনলাইন সংস্করণ

খেলা ডেস্ক:গত বুধবার ফ্রেঞ্চ ওপেনে দ্বিতীয় রাউন্ডে মার্টন ফুকসোভিকসের বিপক্ষে খেলছিলেন জোকোভিচ। সে ম্যাচে বল-গার্ল একটা কিছু এনে দেন ২২টি গ্র্যান্ড স্লাম জেতা সার্বিয়ান তারকাকে। টি-শার্টের নিচে বুকের ওপর ‘প্যাচ’ বা ‘তাপ্পি’র মতো কিছু একটা বদলাতে দেখা যায় তাঁকে। স্বাভাবিকভাবেই আগ্রহ তৈরি হয় সেটি নিয়ে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ে সে ভিডিও।

এরপর সংবাদ সম্মেলনে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ওই ন্যানোটেকনোলজির কথা উল্লেখ করেন জোকোভিচ। এরপর গত বৃহস্পতিবার টাও টেকনোলজিস নামের এক কোম্পানি তাদের অফিশিয়াল টুইটার আইডি থেকে দাবি করে, জোকোভিচ যে প্রযুক্তির কথা উল্লেখ করেছেন, সেটি তাদেরই তৈরি। এটিকে জীবন বদলে দেওয়া যন্ত্র হিসেবেও দাবি করে তারা।

সে টুইটে বলা হয়, ‘আলোচ্য ন্যানোটেকনোলজিটি “টাওপ্যাচ স্পোর্ট”। আমরা টাও টেকনোলিজি একটি ইতালিভিত্তিক কোম্পানি। মানবস্বাস্থ্য ও এর কল্যাণে উদ্ভাবনী ন্যানোটেকনোলজিক্যাল যন্ত্রাংশ তৈরি ও পেটেন্ট করে থাকি।’

কোম্পানিটির ওয়েবসাইট অনুযায়ী, টাওপ্যাচ স্পোর্ট নামের ডিভাইসটি দুই স্তরের ন্যানোক্রিস্টাল ব্যবহার করে থাকে। যার মাধ্যমে শরীরের তাপ আলোতে রূপান্তরিত হয়। এ ডিভাইস মানবশরীরে প্রায় ১৯০টি সংকেত পাঠায়, যার মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ওই মানুষের শরীর তার ভারসাম্য ঠিক করে।

ঠিক কী কারণে এমন যন্ত্র ব্যবহার করেন বা করছেন, সে ব্যাপারে অবশ্য ওই আয়রনম্যানের উদাহরণ দেওয়া ছাড়া বিস্তারিত কিছু বলেননি জোকোভিচ। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ এ ব্যাপারে জোকোভিচের দলের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও কেউ সাড়া দেননি।

তবে টাওপ্যাচের দাবি, তাদের যন্ত্রটি যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসনের অনুমোদন পাওয়ার অপেক্ষায়। তবে টাওপ্যাচ ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের নীতিমালা অনুযায়ী ‘ক্লাস ওয়ান’ বা প্রথম শ্রেণির মেডিকেল যন্ত্র। ফলে এর ব্যবহার অন্তত নিরাপদ হতে হবে। এটা ব্যবহারে যে উপকারিতা পাওয়া যায়, তার মধ্যে আছে—এটা অঙ্গবিন্যাস, ভারসাম্য ও মসৃণ চলাচল উন্নতি করে, ক্রীড়াবিদের পারফরম্যান্সের সঙ্গে একটি নির্দিষ্ট দিকে নজর দেওয়ার সামর্থ্য (ফোকাস) বৃদ্ধি করে। এ ছাড়া এটি ধকল, উদ্বেগ ও ফিরে ফিরে আসা ব্যথা কমায় বলেও জানানো হয়। এমনকি ‘মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস’ নামের অসুখের উপশম করে বলেও দাবি করেছে কোম্পানিটি।

জোকোভিচের মতো একজন কেন এ যন্ত্রের দিকে ঝুঁকলেন, সেটি অবশ্য পরিষ্কার নয়
জোকোভিচের মতো একজন কেন এ যন্ত্রের দিকে ঝুঁকলেন, সেটি অবশ্য পরিষ্কার নয়এএফপি

এ যন্ত্র আদতে কীভাবে কাজ করে? এর ব্যাখ্যায় কোম্পানিটি বলেছে, ‘টাওপ্যাচ এমন একটি ন্যানোটেকনোলজি যন্ত্র, যেটি আলো থেরাপি ও আকুপাংচারের সমন্বয় করে। এর মধ্যে এমন ন্যানোক্রিস্টাল আছে, যেটি আপনার শরীরের তাপকে আলোতে পরিণত করে (এটি আসলেই অন্ধকারে জ্বলে)। এই আলো এরপর শরীরের নির্দিষ্ট আকুপাংচার বিন্দুতে পৌঁছায়, যার মাধ্যমে আপনার শরীর এটি মনে রাখে যে বাকি অংশের সঙ্গে কীভাবে প্রাকৃতিকভাবে যোগাযোগ করা যায়। এর মাধ্যমে স্বাস্থ্যগত অনেক উপকার পাওয়া যায়। যেমন উন্নত ভারসাম্য ও অঙ্গবিন্যাসের মাধ্যমে ঘুম, ফোকাস, ক্রীড়াবিদের পারফরম্যান্স, ব্যথা উপশম আরও ভালো হয়।’ সেখানে বলা আছে, এ যন্ত্র তিন বছর পর্যন্ত টেকসই হয়, গোসলের সময়ও ব্যবহার করা যায়। তবে এ যন্ত্রে কোনো ব্যাটারি নেই কারণ, শরীরের তাপ ব্যবহার করে এটি নিজে নিজেই রিচার্জ হয়।

অবশ্য এ যন্ত্র শুধু পরলেই হবে না, একটি নির্দিষ্ট উপায়ে পরতে হবে। কোম্পানিটির মতে, ‘প্রথম সপ্তাহে ৪ ঘণ্টা পরতে হবে। দ্বিতীয় সপ্তাহে ৮ ঘণ্টা, তৃতীয় সপ্তাহে ১২ ঘণ্টা (যখন জেগে আছেন)। তৃতীয় সপ্তাহের শেষ থেকে এটি সব সময় পরা যাবে।’ এর ব্যবহারকারীদের নির্দিষ্ট তিন বছর পরও এটি পরার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে। এর উপকারিতা কারও ক্ষেত্রে দ্রুত, কারও ক্ষেত্রে একটু দীর্ঘায়িত হতে পারে বলেও জানানো হয়।

জোকোভিচের মতো একজন কেন এ যন্ত্রের দিকে ঝুঁকলেন, সেটি অবশ্য পরিষ্কার নয়। তবে অপ্রচলিত, বিজ্ঞান সমর্থিত নয়—এমন ধারার চিকিৎসাব্যবস্থার দিকে এ সার্বিয়ান তারকার ঝোঁক বরাবরের। এ জন্য ক্যারিয়ারেও ঝক্কি পোহাতে হয়েছে তাঁকে। করোনাভাইরাসের সময় টিকা নিতে অস্বীকৃত জানিয়েছিলেন তিনি। ফলে অস্ট্রেলিয়ান ওপেন খেলতে যাওয়ার পরও দেশটি থেকে তাঁকে বের করে দেওয়া হয়েছিল, ইউএস ওপেনের শেষ দুই আসরেও খেলতে পারেননি। আগে একবার কনুইয়ের অস্ত্রোপচারও বিলম্বিত করেছিলেন তিনি। কারণ, তাঁর মতে, ‘আমাদের শরীরেরই নিজে থেকে সেরে ওঠার স্বয়ংক্রিয় সামর্থ্য আছে।’ যদিও শেষ পর্যন্ত অস্ত্রোপচার করেই পুরোপুরি সেরে ওঠেন তিনি।

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
এই বিভাগের আরও খবর
 

আর্কাইভ

October 2023
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031