আন্তর্জাতিক ডেস্ক :মরোক্কোর সীমান্ত অতিক্রম করে বিপুলসংখ্যক আফ্রিকান অভিবাসী স্পেনের মেলিলা ছিটমহলে যাওয়ার চেষ্টা করলে অন্তত আঠারো জন নিহত হয়েছেন।
ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানের খবর বলছে, শুক্রবার (২৪ জুন) ভোরে প্রায় দুই হাজার অভিবাসী মেলিলায় যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময়ে কাঁচি দিয়ে বেড়া কেটে পাঁচ শতাধিক অভিবাসী সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ এলাকায় প্রবেশ করতে পেরেছেন।
এক বিবৃতিতে স্পেনিশ সরকারের স্থানীয় প্রতিনিধি এমন খবর দিয়েছে। মরোক্কোর কর্মকর্তারা বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যায় অনুপ্রবেশ চেষ্টাকালে আহত হয়ে ১৩ অভিবাসীর মৃত্যু হয়েছে। আর পাঁচ জনের প্রাণহানি ঘটেছে ভোরেই।
তারা জানান, বেড়ার ওপর থেকে পরে গিয়ে কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে নিরাপত্তা বাহিনীর ১৪০ সদস্য ও আরও ৭৬ অভিবাসী আহত হয়েছেন।
গত মাসে স্পেন ও মরোক্কোর কূটনৈতিক টানাপোড়েন দূর হলে প্রথমবারের মতো এ ধরনের অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটেছে। স্পেনিশ সরকারের স্থানীয় প্রতিনিধি বলেন, এ সময়ে ৪৯ স্পেনিশ পুলিশ হালকা আহত হয়েছে।
সীমান্তে হামলা বন্ধে ইতিমধ্যে সেখানে নিরাপত্তা বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য মোতায়েন করেছে মরোক্কো। তারা স্পেনের নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সক্রিয়ভাবে সহযোগিতা করছে। স্পেনের সংবাদমাধ্যমের ছবিতে দেখা গেছে, মেলিলার রাস্তার পাশে ক্লান্ত অভিবাসীরা শুয়ে আছে। কারও কারও হাতে রক্ত ও পোশাক ছিন্ন ছিল।
এভাবে সহিংস অনুপ্রবেশ চেষ্টার নিন্দা জানিয়েছেন স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো স্যানচেজ। ব্রাসেলসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি মানবপাচারকারী মাফিয়াদের দায়ী করেন।
স্পেনের উত্তর আফ্রিকার দুটি ছোট্ট ছিটমহল মেলিলা ও সিউটা। আফ্রিকার সঙ্গে যা ইউরোপীয় ইউনিয়নের একমাত্র স্থল সীমান্ত। যে কারণে এই দুই ছিটমহল দিয়ে অভিবাসীরা ইউরোপে প্রবেশের চেষ্টা করেন।
পশ্চিমাঞ্চলীয় শাহারায় মরোক্কোর স্বায়ত্তশাসন পরিকল্পনায় স্পেন সমর্থন দিলে দুদেশের বছরব্যাপী কূটনৈতিক সংকটের অবসান ঘটে। এরপর রাবাত সফরে যান পেদ্রো স্যানচেজ। এ সময়ে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের নতুন ধাপকে স্বাগত জানিয়েছে দুদেশের সরকার।
পশ্চিম সাহারার স্বাধীনতাপন্থী নেতা ব্রাহিম ঘালিকে মাদ্রিদে চিকিৎসা নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হলে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু হয়। ২০২১ সালের এপ্রিলে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি।
তখন সীমান্ত প্রহরীরা অন্যদিকে মনোযোগ দিলে মরোক্কো সীমান্ত দিয়ে সেউটা ছিটমহলে ঢুকে পড়ে প্রায় ১০ হাজার অভিবাসী। এ ঘটনাকে স্পেনকে দেওয়া মরোক্কোর শাস্তি হিসেবে দেখা হয়েছে।