নিউজ ডেস্ক:স্বপ্নের পদ্মা সেতু খুলে গেছে সর্ব সাধারণের জন্য। আজ (রোববার) সকাল ৫টা ৪০ মিনিট থেকে সেতু দিয়ে পার হচ্ছে যানবাহন। সেতু চালু উপলক্ষে দেখা মিলেছে শত শত উৎসাহী মানুষের। তারা এসেছেন পদ্মা সেতু ঘুরে দেখতে। এসব দর্শনার্থীদের নিয়ে সেতু পারাপারে চলছে ‘রমরমা ব্যবসা’।
পদ্মা সেতু এলাকায় আছেন সমকালের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকে রাজীব আহাম্মদ। তিনি জানান, দর্শনার্থীরা ভাড়ার মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাস ও বাসে করে সেতু পার হচ্ছেন। তাদের থেকে আদায় করা হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া।
আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দেখা গেছে, এসব ভাড়ার মোটরসাইকেলে দুইজন করে যাত্রী বহন করা হচ্ছে। অনেক যাত্রীরই নেই হেলমেট। এতে বড় ধরনের দুর্ঘটনার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। মোটরসাইকেলে যাত্রীপ্রতি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে দুইশ টাকা। মোটরসাইকেল চালক মো. রিপন মিয়া সংবাদমাধ্যমকে বলেন, সেতু পাড়ি দিতে সময় লাগছে মিনিট দশেকের মতো। সেতুতে মোটরসাইকেলের টোল একশ টাকা। টোলের খরচ বাদে ১০ মিনিটের একেকটি ট্রিপে লাভ থাকছে তিনশ টাকা।
মাদারীপুরের কালনার এই বাসিন্দা বলেন, মোটরসাইকেল চালানো পেশা না। নতুন মোটরসাইকেল কিনেছি। সেতুতে ভাড়া টেনে দামের কিছু টাকা তুলে নিচ্ছি।
মোটরসাইকেলের মতো মাইক্রোবাসেও বাণিজ্যিকভাবে যাত্রী পরিবহন নিষিদ্ধ। কিন্তু নিয়মের তোয়াক্কা কেউ করছে না। ১১ আসনের একটি মাইক্রোবাসে নেওয়া হচ্ছে ১৫ থেকে ১৭ জন যাত্রী। একেকজনের ভাড়া দুইশ টাকা। ১৩শ টাকা টোল দিয়ে একেক ট্রিপে লাভ থাকছে প্রায় দুই হাজার টাকা।
আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মাইক্রোবাসের চালক সংবাদমাধ্যমকে একথা জানান। তার নাম মো. রনি। তিনি জানান, সকাল ৯টার দিকে জাজিরা থেকে একটি ট্রিপ নিয়ে এসেছেন। এখন মাওয়া থেকে আরেক দফা যাত্রী নিয়ে সেতু পাড়ি দিচ্ছেন।
পিছিয়ে নেই যাত্রীবাহী বাসও। মাওয়া পর্যন্ত রুট পারমিট আছে, এমন বাসও আজ যাত্রী নিয়ে ছুটছে ভাঙ্গায়। সেতুর মাওয়া প্রান্ত থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ভাড়া হওয়ার কথা একশ টাকা। কিন্তু দুইশ টাকা করে ভাড়া নিচ্ছে বাসে। মাওয়া থেকে যাত্রী নিয়ে ভাঙ্গায় যাওয়া আপন পরিবহনের একটি বাসের (ঢাকা মেট্রো-ব ৩২৪৩) হেলপার বাড়তি ভাড়া প্রসঙ্গে বলেন, সখের দাম ২০০ টাকা।
সকাল ৬টার দিকে সেতুর মাওয়া প্রান্তে প্রায় এক হাজার মোটরসাইকেলের জটলা দেখা যায়। প্রায় সবাই এসেছেন পদ্মা সেতু ভ্রমণে। বেলা ১০টার পর থেকে ধীরে ধীরে সেই জটলা ছেড়েছে। এ রিপোর্ট লেখার সময় (বেলা সাড়ে ১১টা) ভিড় কমে গেছে।
ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফেরিতে অপেক্ষার দিন শেষে প্রমত্তা পদ্মা পারাপারে আজ এসেছে গতি। সেই সাথে জনসাধারণের অতি উৎসাহ ও অসচেতনতায় ভর করেছে বড় ক্ষতির শঙ্কা। এ বিষয়ে মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তানভীর হাসান শাওন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, পদ্মা সেতুর উত্তর থানায় রাস্তার মুখে পুলিশ নিরাপত্তার দায়িত্বে আছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সর্বাত্মক তৎপরতা অব্যাহত আছে। তবে টোল প্লাজা আমাদের দায়িত্বের বাইরে। কেউ আইন ভাঙছে কি না, তা খোঁজ নিয়ে দেখব।