• ঢাকা, বাংলাদেশ

দেশে গ্যাসের ক্রমবর্ধমান চাহিদায় নির্মিত হচ্ছে আরো দুটি এলএনজি টার্মিনাল 

 obak 
27th Aug 2022 2:32 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

নিউজ ডেস্ক:দেশে আরো দুটি এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ করতে যাচ্ছে সরকার। মূলত গ্যাসের ক্রমবর্ধমান চাহিদার কারণেই এই উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। নতুন দুটি টার্মিনালের একটি বেসরকারি কোম্পানি সামিট মহেশখালীতে নির্মাণ করবে। যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি এক্সিলারেট এনার্জি অপর টার্মিনালটি পটুয়াখালীর পায়রায় নির্মাণ করবে। টার্মিনাল দুটি নির্মাণে চলতি বছরই চুক্তি সই করবে পেট্রোবাংলা। জ্বালানি বিভাগ সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, দেশে নতুন করে ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ না করে স্থলভিত্তিক টার্মিনাল নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সরকার। কিন্তু এখন ওই সিদ্ধান্ত সরে এসে নতুন দুটি টার্মিনালও ভাসমান হবে। বর্তমানে মহেশখালীতে বিদ্যমান দুটি টার্মিনালও ভাসমান। এক্সিলারেট এনার্জি পেট্রোবাংলা ও সামিটের পৃথক মালিকানায় দুটি টার্মিনালই পরিচালনা করছে। আর ওই দুটি টার্মিনালে দৈনিক ১০০ কোটি ঘনফুট গ্যাস রূপান্তরের সক্ষমতা থাকলেও অর্থসঙ্কটের কারণে তাতে ৫০-৬০ কোটি ঘনফুটের বেশি গ্যাস সরবরাহ করা যাচ্ছে না। ব্যয়বহুল ওই জ্বালানি আমদানিতে পেট্রোবাংলা হিমশিম খাচ্ছে। আর তাতে বিল পরিশোধের জন্য গ্রাহক পর্যায়ে গ্যাসের দাম ক্রমেই বাড়ছে।
সূত্র জানায়, এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণে সামিট ও এক্সিলারেটের প্রস্তাব যাচাই-বাছাই করেছে পেট্রোবাংলা। এলএনজি ব্যয়বহুল হলেও তা আমদানি ছাড়া আপাতত সরকারের হাতে বিকল্প নেই। তবে স্থানীয় গ্যাস অনুসন্ধান-উৎপাদন বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। আর তা সফল হলে দেশে সরবরাহ করা মোট গ্যাসে স্থানীয় ও আমদানি উৎসের মধ্যে সমন্বয় করা যাবে। উভয় টার্মিনাল (ফ্লোটিং স্টোরেজ অ্যান্ড রিগ্যাসিফিকেশন ইউনিট) নির্মাণ ও পরিচালনা চুক্তি বিদ্যুৎ ও জ্বালানি দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইনের আওতায় হবে। দরপত্রবিহীন এই ব্যবস্থার ফলে চুক্তি নিয়ে ভবিষ্যতে কোনো আপত্তি-মামলা হলে সংশ্লিষ্টরা দায়মুক্তি পাবে। নতুন দুটি টার্মিনালের প্রতিটির দৈনিক এলএনজি রূপান্তরের ক্ষমতা ৫০ কোটি ঘনফুট গ্যাস।
সূত্র আরো জানায়, সামিটের প্রস্তাব অনুযায়ী প্রতি ইউনিট (মিলিয়ন ব্রিটিশ থার্মাল ইউনিট-এমএমবিটিইউ) এলএনজির দাম পড়বে ২০ মার্কিন ডলার। হেনরি হাব ইনডেক্স অনুসরণ করে ওই মূল্যহার প্রস্তাব করা হয়েছে। আর জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, চীন ও তাইওয়ান যে দামে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি কেনে, ওই দামে ২০২২ সালে এক্সিলারেট তা বাংলাদেশে বিক্রি করবে। ২০২৩ সাল থেকে ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের আন্তর্জাতিক দামের ৩ মাসের গড়ের ১১ দশমিক ৭০ শতাংশ হারে এলএনজি সরবরাহের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
এদিকে এ প্রসঙ্গে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান জানান, এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের জন্য সামিট ও এক্সিলারেটরের সঙ্গে চুক্তি করার ব্যাপারে সরকার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে এখনো সবকিছু চূড়ান্ত হয়নি। চূড়ান্ত করার পরই চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে পারে। গ্যাসের চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ না থাকায় ২০১৮ সালের আগস্টে দেশে প্রথম এলএনজি থেকে গ্যাস রূপান্তর করে জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হয়। তারপর ২০১৯ সালের এপ্রিলে দ্বিতীয় এলএনজি টার্মিনাল যাত্রা শুরু করে। কক্সবাজারের মহেশখালীতে দুটি টার্মিনালের প্রতিটির দৈনিক উৎপাদন (রিগ্যাসিফিকেশন) সক্ষমতা ৫০ কোটি ঘনফুট। প্রথমটির মালিকানা রাষ্ট্রায়াত্ত সংস্থা পেট্রোবাংলা এবং দ্বিতীয়টির মালিক একটি বেসরকারি কোম্পানি। দুটিই ইজারার ভিত্তিতে পরিচালনা করছে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি এক্সিলারেট এনার্জি। নতুন দুটি টার্মিনালও ওই একই কোম্পানির কাছে যাচ্ছে। আগের দুটি টার্মিনালের প্রতিটির বছরে ৩ দশমিক ৭৫ মিলিয়ন টন গ্যাস ধারণের ক্ষমতা রয়েছে। নতুনগুলোর ধারণক্ষমতাও একই পরিমাণ হবে। সেগুলো নির্মাণ শেষ হলে দেশে স্থানীয় ও আমদানিকৃত গ্যাসের পরিমাণ কাছাকাছি দাঁড়াবে।

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
এই বিভাগের আরও খবর
 

আর্কাইভ

December 2023
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031