obak
04th Aug 2023 1:12 pm | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: রাশিয়ার বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে ড্রোন হামলা অব্যাহত রেখেছে ইউক্রেন। ঝাঁকে ঝাঁকে আসা এসব ড্রোনের আঘাতে দিশেহারা অবস্থা রাশিয়ার। বেশিরভাগ ড্রোনই ঠেকাতে পারছে না রুশ বাহিনী। সবশেষ কৃষ্ণসাগরের তীরে অবস্থিত রুশ বন্দরনগরী নভোরোসিয়স্কে ড্রোন হামলা হয়েছে। এই হামলায় রাশিয়ার নৌবাহিনীর একটি জাহাজ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
গত প্রায় দেড় বছর ধরে চলছে ইউক্রেন ও রাশিয়া সংঘাত। গত বছরের ফেব্রুয়ারি কিয়েভ অভিমুখে রুশ সামরিক অভিযানের মধ্য যে সংঘাতের শুরু। এই অভিযানের এক পর্যায়ে ড্রোনের ব্যবহার শুরু করে রুশ বাহিনী।
সম্প্রতি রাশিয়ার বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযান শুরু করে ইউক্রেনীয় বাহিনী। এরই অংশ হিসেবে চালানো হচ্ছে ড্রোন হামলা। বিপরীতে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভসহ বিভিন্ন শহর লক্ষ্য করে হামলা অব্যাহত রেখেছে রুশ বাহিনীও।
আনর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন মতে, চলতি সপ্তাহে রাশিয়াকে লক্ষ্য করে ইউক্রেনের ড্রোন হামলা বেড়েছে। এসব হামলার মাধ্যমে চলমান যুদ্ধকে রাশিয়ার দোরগোড়ায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে জানান ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
এর ফলে জলে-স্থলে এই হামলার মুখে পড়ছে রাশিয়া। চলতি সপ্তাহে গত মঙ্গলবার (১ আগস্ট) রাজধানী মস্কোয় একটি বাণিজ্যিক এলাকায় দ্বিতীয়বারের মতো ড্রোন হামলা চালানো হয়। ওই হামলায় একটি বহুতল ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ভবনটিতে রুশ সরকারের তিনটি মন্ত্রণালয় অবস্থিত বলে জানা গেছে।
হামলার পর মস্কোর মেয়র সের্জেই সেবেনিয়ান জানান, রাজধানীতে বেশ কয়েকটি ড্রোন ভূপাতিত করা হয়। তবে একটি ড্রোন বহুতল ভবনে এসে আছড়ে পড়ে। তিনি আরও জানান, হামলায় মস্কোভা সিটি কমপ্লেক্সের ২১ তলার সামনের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সামনের কাঁচের ১৫০ মিটারেরও বেশি ধ্বংস হয়ে যায়।
ওই ড্রোন হামলাকে ইউক্রেনের ‘সন্ত্রাসী হামলা’ বলে অভিহিত করে রাশিয়া। তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের এক উপদেষ্টা বলেন, আরও ড্রোন হামলা ও ‘আরও যুদ্ধ’ দেখার জন্য মস্কোর প্রস্তুত থাকা উচিত।
এরপর শুক্রবার (৪ আগস্ট) কৃষ্ণসাগরের তীরে অবস্থিত রুশ বন্দরনগরী নভোরোসিয়স্কে রাতভর ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে। নভোরোসিয়স্ক রাশিয়ার পণ্য রফতানির জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি বন্দর।
ইউক্রেনীয় গোয়েন্দা বাহিনী বলছে, সমুদ্র ড্রোন দিয়ে রুশ বন্দর নভোরোসিয়স্কে হামলা চালানো হয়েছে। ইউক্রেনের সিকিউরিটি সার্ভিস ও নৌবাহিনীর চালানো এই হামলায় রাশিয়ার নৌবাহিনীর একটি জাহাজ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে ক্ষতিগ্রস্ত জাহাজটির নাম ওলেনেগোরস্কি গরনিয়াক। ড্রোন হামলায় জাহাজটিতে মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং এমনকি এটি তার যুদ্ধ মিশনও আর চালাতে পারছে না।
এর আগে কয়েকদিন আগেই কৃষ্ণসাগরে রাশিয়ার নৌযান লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালায় ইউক্রেন। তবে সেসব হামলা প্রতিহত করা হয়েছে বলে জানায় রাশিয়া।
গত মঙ্গলবার (১ আগস্ট) মস্কো জানায়, তারা কৃষ্ণসাগরে রাতে টহল নৌযান লক্ষ্য করে চালানো ড্রোন হামলা প্রতিহত করেছে। শুক্রবার (৪ আগস্ট) রাশিয়া ইউক্রেনের ড্রোন হামলার কথা স্বীকার করে জানায়, তারা ক্রিমিয়ার আকাশে ১৩টি ইউক্রেনীয় ড্রোন ধ্বংস করেছে।
ছোট আকারের এসব সামুদ্রিক ড্রোন পানির ওপর বা নিচ দিয়ে হামলা চালাতে পারে বলে জানা গেছে। গত মাসে ক্রিমিয়ার কের্চ সেতুর ওপর পরিচালিত হামলায় একই ধরনের সামুদ্রিক ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছিল বলে সম্প্রতি সিএনএনকে নিশ্চিত করেছে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূত্রগুলো।