এ সময় জাপার চেয়ারম্যান বলেন, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম যখন নিম্নমুখী, তখন হঠাৎ দাম বাড়াতে হলো কেন? তেলের দাম ১০৯ ডলার থেকে কমিয়ে ৮৯ ডলার হয়েছে, তখন কেন দেশে তেলের দাম বাড়াতে হবে? যখন তেলের দাম কম ছিল, তখন হাজার কোটি টাকা লাভ হয়েছে, সেই টাকা গেল কোথায়? লুটপাট হয়েছে?
জি এম কাদের বলেন, ‘আমি আগে যখন বলেছি দেশ শ্রীলঙ্কার দিকে যাচ্ছে, তখন আমাকে বলা হলো আমি নাকি মূর্খ। কিন্তু এখন এই অবস্থা কেন?’ তিনি বলেন, ‘শ্রীলঙ্কার সঙ্গে কিছু মিল রয়েছে আমাদের। সেখানেও স্বৈরশাসন চলছে। জনগণের কাছে শাসকদের কোনো জবাবদিহি নেই। আর মেগা প্রকল্পের নামে লুটপাট ও দুর্নীতি চলছে। আমরা শ্রীলঙ্কার মতো স্বৈরশাসন চাই না, মেগা প্রকল্প চাই না।’
করোনা মহামারি ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে বলে মন্তব্য করেন জি এম কাদের। তিনি বলেন, এমন অবস্থায় জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলা হয়েছে। তেলের দাম বাড়ালেই পরিবহনশ্রমিকেরা একধরনের হরতাল ডেকে গণপরিবহন বন্ধ করে দেন। তখন সরকার হাত-পা ধরে কিলোমিটারে ৩৫ থেকে ৪০ পয়সা বাড়িয়ে দেয়। আর পরিবহনশ্রমিকেরা কয়েক গুণ বেশি টাকা আদায় করছেন। যদি কেউ অতিরিক্ত ভাড়া দিতে রাজি না হয়, তাকে পথে নামিয়ে দেওয়া হয়। জনগণের এই দুর্ভোগ দেখার যেন কেউ নেই।
সংসদে বিরোধী দলের উপনেতা বলেন, কুইক রেন্টাল আর ক্যাপাসিটি চার্জের নামে উৎপাদন ছাড়াই হাজার কোটি টাকা লোপাট করা হচ্ছে। আমরা জ্বালানি খাতের দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে বলছি। বিশ্বব্যাংক আর আইএমএফকে সকাল–সন্ধ্যা গালাগাল করল সরকার। আমাদের নাকি অনেক রিজার্ভ আছে। কিন্তু এখন কেন ঋণের জন্য ধরনা দিচ্ছে? এত রিজার্ভ গেল কোথায়?
জাপার চেয়ারম্যান বলেন, অনেক দেশে তেলের মূল্যবৃদ্ধির কথা বলা হচ্ছে সরকারের পক্ষ থেকে। কিন্তু সেসব দেশে রেশন দেওয়া হয় আর দুঃসময়ে নগদ টাকাও দেওয়া হয় জনগণকে। সেখানে মানুষের প্রতি সরকারের জবাবদিহি আছে। আমাদের দেশের মানুষ প্রতিনিধি নির্বাচন করেন, এখন প্রতিনিধিরা রাজা হয়ে গেছেন, সাধারণ মানুষ হয়েছে প্রজা। আমরা আর রাজা চাই না। দেশের মানুষ তাদের প্রতিনিধি নির্বাচনের অধিকার ফিরে পেতে চায়। তাই একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চায় দেশের মানুষ।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন জাপার জ্যেষ্ঠ কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ, জাপার মহাসচিব মুজিবুল হক, জাপার কো–চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন, সালমা ইসলাম, প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান, ফকরুল ইমাম, মীর আব্দুস সবুর, শফিকুল ইসলাম, রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া প্রমুখ।