• ঢাকা, বাংলাদেশ

অবকাঠামো ধ্বংস করা দেশপ্রেমের কাজ নয় 

 obak 
25th Oct 2022 7:42 pm  |  অনলাইন সংস্করণ
হামিদুল আলম সখা : জাতীয় নির্বাচনের দিন যতো এগিয়ে আসছে রাজনৈতিক মাঠ তত গরম হচ্ছে। আগামি ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসের প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবার সম্ভাবনা রয়েছে। সেই কারণে বিরোধী দল তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড জোরেসুরে শুরু করেছে। বিরোধী দলের মধ্যে মূলত: প্রধান বিরোধী দল বিএনপিকেই বুঝায়।যদিও সংসদে বিরোধী দল জাতীয় পার্টি। অন্যান্য দলও আগামি নির্বাচনের পথ সুপ্রশস্থ করার জন্য মাঠে নেমেছে। জাতীয় পার্টি,জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি, কমিউনিস্ট পার্টি সহ বিভিন্ন দল প্রায় প্রতিদিনই সভা, সেমিনার করে যাচ্ছেন। এছাড়া সামাজিক,মানবিক সংগঠনগুলো কাজ করছেন।
এখানে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর দাবি বর্তমান নির্বাচন কমিশন দিয়ে আগামি জাতীয় সংসদ নির্বাচন করা যুক্তি সংগত হবে না।কেন না তারা নিরপেক্ষ নয়।আর এ কারণেই সরকারী দলকে পদত্যাগ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করতে হবে। কিন্তু সরকারী দল বলছে সমস্যা কোথায়? নব্বই এর গণঅভ্যুত্থানের মধ্যদিয়ে লেবাসধারী সামরিক স্বৈরশাসক  এরশাদকে পরাভূত করে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা হয়েছিল। তখন দলমত নির্বিশেষে বলা হয়েছিল পরপর তিন টি জাতীয় নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে করা হবে। সরকারী দল বলছে আর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজন নেই। এই নিয়ে বর্তমানে বিরোধী দল রাজনৈতিক মাঠ গরম করছেন। সাথে সাথে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চাচ্ছেন। তারা দাবী করছেন, যে মামলায় বেগম খালেদা জিয়াকে শাস্তি দেয়া হয়েছে তা’ সাজানো এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসা প্রসুত। তাই বিএনপি বেগম খালেদা জিয়া মুক্তি চান।
ইতোমধ্যে বিএনপি চট্রগ্রাম, ময়মনসিংহ এবং খুলনায় সমাবেশ করেছেন। তাদের দল বলছে  সরকারী দল আওয়ামীলীগ তাদের সমাবেশ করতে বাধাগ্রস্থ করছে। অন্যদিকে সরকারী দল বলছে, দেশে গণতন্ত্র আছে, বিরোধী দল সভা সমাবেশ করছে,সরকারী দল বাঁধা দিচ্ছে না বরং সহযোগিতা করছে।সরকারী দল বলছে , বিরোধী দল বিএনপি এর নেতাকর্মীরা যাতে কোন ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত না হয় সেজন্য আওয়ামীলীগ এর কর্মিরা অতন্ত্র প্রহরীর মতো কাজ করছে।
সরকারী দল এবং বিরোধী দলের বাকবিতন্ডা চলছে ,চলবে।তবে সাধারণ জনগণ চায় সুষ্ঠু নির্বাচন, সন্ত্রাস বর্জন । প্রাতিষ্ঠানিক অবকাঠামো ধ্বংস করা যাবে না। খুলনায় নতুন রেলওয়ে ষ্টেশন ভাংচুর করা হয়েছে। মা অত্যন্ত দুঃখজনক। সংবাদ মাধ্যমে একে অপরের দুষারোপ করছে।
জনতার কথা হলো যদি কোন ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড হয় এর জন্য যে সংগঠন সমাবেশ করবে তাদেরকে দায়িত্ব নিতে হবে। কারণ জনগণের ট্যাক্সের টাকায় অবকাঠামো তৈরি করা হয়। আর সেগুলো ধ্বংস করা মানে দেশের বিরুদ্ধে কাজ করা। এ ব্যাপারে সরকারী সংস্থা, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সুষ্ঠুভাবে দায়িত্ব পালন করবে।
গণতন্ত্র মানে তো জনগণকে কষ্ট দেয়া নয়। গণতন্ত্র মানে রাস্তা দখল করে সমাবেশ করে জনদূর্ভোগ বাড়ানো নয়। গণতন্ত্র মানে সড়কপথ ,নৌপথ ধর্মঘট করা নয়।জনগণের ক্ষতি করা নয়।এটি রাজনীতিবিদদের বুঝতে হবে।
১৯৭১ সালে এক সাগর রক্তের বিনিময়ে বীর বাঙালিরা পাক হানাদারদের পরাস্থ করে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছিল। পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশ নামের একটি স্বাধীন ভূমির অস্তিত্ব পেয়েছিল বাঙালি জাতি। আমাদের বাংলা ভাষা প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে বাঙালির অবদান কেউ অস্বীকার করতে পারবেনা।তেমনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঐতিহাসিক ৭ মাচের ভাষণ  দেন।”এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম” । বঙ্গবন্ধু আরো বলেন, যার যা  আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা কর। বাংলা মায়ের দামাল ছেলে মেয়েরা মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। বীরমুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগ আমরা কখনোই ভুলবো না। বঙ্গবন্ধু কন্যা  প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশকে উন্নতির দোরগোড়ায় নিয়ে গেছেন।৫০ বছরের এই বাংলাদেশ।শেখ হাসিনা মাত্র ১৩ বছরে বাঙালিকে উন্নয়নের স্বাদ দিয়েছেন।নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ, কর্ণফুলী ট্যানেল, মেট্রোরেল, রূপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্র,পায়রা সমুদ্রবন্দর, রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র ইত্যাদি অবকাঠামো তিনি তৈরীর করে দিয়েছেন। তা কেউ ধ্বংস করতে পারে না।যারা বাংলাদেশের অবকাঠামো ধ্বংস করবে , করতে চাইবে তারা দেশপ্রেমিক নয়।
সুতরং আসুন, সুষ্ঠুভাবে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করি। ধ্বংস, ভাংচুর পরিহার করে সুন্দর সমাজ গড়ি , সৌহার্দ্য সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়ে তুলি।এই হোক আজকের  প্রত্যাশা।
#
হামিদুল আলম সখা
সদস্য
বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ কমিটি
বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ, কেন্দ্রীয় কমিটি।
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

আর্কাইভ

September 2023
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930